ভারত উপমহাদেশের ভুপেন হাজারিকার সেই বিখ্যাত গান “আমি এক যাযাবর, পৃথিবী আমাকে আপন করেছে, ভূলেছি নিজেরই ঘর, তাই আমি যাযাবর,”এ গান গেয়ে যিনি মঞ্চ মাতাতেন তিনি শেরপুরের একজন গুনি শিল্পী আতিকুর রহমান আতিক। এক সময় তর গান শুনে মোহিত হয়ে থাকত শেরপুরের সঙ্গীত ভক্ত মানুষ। ফায়ার সার্ভিসের চাকুরির পাশপাশি শেরপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি একজন অতি পরিচিত মুখ। শেরপুর জেলাতে তার রয়েছে কয়েক হাজার সঙ্গীত শিল্পী শিক্ষার্থী। তিনি একাধারে কন্ঠশ্লিল্পী, তবলা বাদক, মাউথার বাঁশি, গিটারিষ্ট। আতিক ফায়ার সার্ভিসের চাকুরি থেকে অবসর নিয়ে শেরপুরের বিভিন্ন সঙ্গীত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান শিল্পকলা, উদিচি, পাতাবাহার খেলাঘর আসর, সঙ্গীত ও চারুকলাসহ প্রায় সকল সঙ্গীত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকতা করেছেন। সর্বশেষ এ শিক্ষকতায় তার উপার্জনের মূল উৎস ছিল। এ গুনি সঙ্গীত শিল্পীর বাড়ী শেরপুর জেলা শহরের নারায়নপুর মহল্লায়।
কিন্তু বর্তমানে তিনি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। সেই সাথে শেষ নি:স্বাসের প্রহর গুনছেন আর তার সংসারের একমাত্র অবলম্বন বড় ছেলে আশিকুর রহমান রয়েল এর মুখ দেখে মরতে চায়েছেন। মাঝে মাঝে জ্ঞান ফিরে আসলে রাজনৈতিক মামলায় ৫ মাস যাবত জেলা কারাগারে বন্দি বড় ছেলে রয়েলকে এক নজর দেখতে ছটফট করছে তিনি। এসময় আত্মিয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে আকুতি জানাচ্ছে তিনি মৃত্যুর আগে যেনো তার বড় ছেলে রয়েলকে দেখে মরতে পারে।
তার পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে, সয্যাসায়ি এই গুনি শিল্পীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। স্ত্রী মারা গেছেন ৫ বছর আগে। রয়েল ছাড়া অপর ছেলে অসুস্থ ও বেকার। একমাত্র মেয়ে থাকেন শ্বশুরালয়ে। সংসারের এ অবস্থায় এ শিল্পীর দেখাশোনা করে ছেলে রয়েলের স্ত্রী ৩ সন্তানেন জননী চাইনিজ পারভিন । একেতো অভাব তার উপর বড় ছেলে জেল খানায়। অর্থ ও লোকের অভাবে তার চিকিৎসা ও দেখাশোনাও ঠিকমত হচ্ছে না। সব মিলিয়ে এ গুনি শিল্পীর আকুতি শোনার কেউ নেই বুঝি ?
শেরপুর জেলা উদিচি’র সভাপতি ও বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী অধ্যাপক তপন সারোয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, এই গুনি শিল্পীর পাশে রাষ্ট্রসহ সকলের দাড়ানো উচিত।