সংগীত মনের অব্যক্ত যন্ত্রনাগুলোসহ ক্লান্তি আর কষ্ট ভুলিয়ে মানুষকে কর্মমুখী করে তুলে। অনেক সময় মনের বেদনাগুলো গানের সুরে ভেসে আসে। আর তখনই সংগীত পিপাসু মানুষের হৃদয় হয় পুলকিত ও আনন্দিত। সংগীত হলো মানুষের মানবিক চাহিদার অন্যতম একটি। তাইতো সংগীত জগতে কেউ গায়ক আবার কেউ শ্রোতা। শেরপুর জেলা শহরের এমনি এক কিশোরী কন্ঠশিল্পী নুসরাত জাহান রিয়া। সম্প্রতি তিনি শেরপুর টাইমস ডটকমের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তার সাক্ষাতকারটি গ্রহন করেছেন শেরপুর টাইমস ডটকমের বার্তা সম্পাদক এম. সুরুজ্জামান। সাক্ষাতকারটির চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
শেরপুর টাইমস : শেরপুর টাইমস ডটকমের পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। কেমন আছেন ?
রিয়া : সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবাণীতে ভাল আছি। শেরপুর টাইমস ডটকমকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।
শেরপুর টাইমস : আমরা জেনেছি আপনি শেরপুর জেলার গানের জগতে বেশ সুনামের সাথে এগিয়ে যাচ্ছেন। সংগীতে আপনার এই আগ্রহে কার অবদান বেশি বলে মনে করেন? আর কিভাবে, কার অনুপ্রেরনায় আপনি সংগীতের জগতে এলেন?
রিয়া : আমার বয়স যখন ৪ বছর তখন থেকেই আমি আমার বাবার মুখে গুনগুন করে গান গাওয়া শুনে আমিও গান করা শুরু করি। আর আস্তে আস্তে সংগীত জগতে আগ্রহ বাড়তে থাকে।
শেরপুর টাইমস : গানের জগতে আসার কোন ঘটনাকি আপনার মনে পড়ে?
রিয়া : হ্যা এমন একটি ঘটনা থেকেই আমি নুসরাত জাহান রিয়া সামনে এগিয়ে চলছি। একদিন আমার স্কুলে উপজেলা পর্যায়ে সংগীতের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করলাম। আমি কখনো ভাবতেই পারিনি যে ফলাফলে আমি প্রথম স্থান অধিকার করতে পারবো। তখন উপস্থিত সকলেই আমাকে পরামর্শ দিল রিয়া তুমি গান শিখ। প্রয়োজনে গানের স্কুলে ভর্তি হও। সেদিন আমার সাথে থাকা আম্মুকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করেছিলাম। এর কিছু দিন পরেই আমি শেরপুরের পাতাবাহার খেলাঘর আসরে ভর্তি হলাম। এভাবে আমার গান শেখার আগ্রহ আরো বেড়ে গেল। স্থানীয় বিভিন্ন গানের প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান আমার দখলে চলে আসল। এরপর থেকেই ওস্তাদরা আমাকে নানান প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করাতে লাগল।
শেরপুর টাইমস : পাতাবাহার খেলাঘর আসরে কয় বছর গান শিখেছেন?
রিয়া : আমি ওখানে ৩ বছর গান শিখেছি। এখনো আমি ওস্তাদের কাছে গানের তালিম নিচ্ছি।
শেরপুর টাইমস : আপনার ওস্তাদ কে? এখন ব্যস্ততা কি নিয়ে?
রিয়া : আমার গানের ওস্তাদ আশিকুর রহমান আশিক। উনি মুলত টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা। বর্তমানে শেরপুরের চাকুরী করার পাশাপাশি আমাকে গানের তালিম দেন। আমি এখন ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন স্টেজ প্রোগ্রাম করছি। দিন দিন বেশ পরিচিতিও বাড়ছে।
শেরপুর টাইমস : আপনি আসলে কোন ধরনের গান করেন?
রিয়া : আমি সব ধরনের গানই করি। তবে আমার পছন্দ হলো লোক সংগীত। এটাতে আমি ২০১৫ সালে জাতীয় পুরষ্কারও পেয়েছি।
শেরপুর টাইমস : আপনি কি কোন টেলিভিশনের রিয়েলিটি শো’তে অংশ গ্রহন করেছেন?
রিয়া : না আমি এখনো কোন রিয়েলিটি শো’তে অংশ গ্রহন করিনি। তবে একুশে টিভিতে গান করেছি। তাছাড়া আমি বিটিভি’র সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতায় লোক সংগীতে ২০১৫ সালে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছি। তাছাড়া সুযোগ পেলে রিয়েলিটি শো’তে অংশ গ্রহন করার ইচ্ছা আছে।
শেরপুর টাইমস : গানের পাশাপাশি আর কি করেন?
রিয়া : আমি শেরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছি। পাশাপশি বিভিন্ন স্টেজ প্রোগ্রামও করছি।
শেরপুর টাইমস : গান নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
রিয়া : আল্লাহর রহমতে সকল দর্শক শ্রোতার দোয়ায় আমি আরো এগুতে চাই, ভাল একজন সংগীত শিল্পী হতে চাই। দর্শকশ্রোতা ও ভক্তদের অনুপ্রেরনা পেলে আমি সংগীত বিষয়ের উপর অনার্স মাষ্টার্স করার ইচ্ছা আছে।
শেরপুর টাইমস : আপনার পারিবারিক পরিচয়টা দিবেন কি?
রিয়া : হা হা হা…..এটাতো আসলে ব্যাক্তিগত বিষয় তবুও আমার ভক্তশ্রোতাদের জানার জন্য বলছি, আমার বাবার নাম আব্দুল জলিল। আমরা ৩ ভাই-বোন। বড় ভাই পড়াশুনা শেষ করে জব করছে। আর ছোট ভাই বিবিএ থার্ড ইয়ারে পড়ছে। শেরপুরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকায় আমাদের বাসা।
শেরপুর টাইমস : আপনার ভক্তদের কিছু চাওয়ার আছে?
রিয়া : হ্যা অবশ্যই চাওয়ার আছে। দর্শক শ্রোতারাই আমার প্রাণ। আমি তাদের কাছে দোয়া চাই। আমি যাতে আরো সামনে এগিয়ে গিয়ে শেরপুরের সুনাম বয়ে আনতে পারি।
শেরপুর টাইমস : আপনি আপনার গানের জগতের অনেক কথা শুনালেন আমাদের। এজন্য শেরপুর টাইমস ডটকমের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।
রিয়া : আমাকে সুযোগ করে দেয়ার জন্য। ভাল থাকবেন। শেরপুর টাইমস ডটকমকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনুলিখন : টাইমস ডেস্ক।