শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশ কেন্দ্রের মিনি চিড়িয়াখানায় বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট অভিযান চালিয়ে ৭ প্রজাতির ১৭টি বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে ঢাকা থেকে আসা বিশেষ টিম এই অভিযান পরিচালনা করে।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের নেতৃত্বে ছিলেন বন বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা। অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইগাতীর রাংটিয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক তানভীর আহমেদ, শেরপুর জেলা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার, ওয়াইল্ডলাইফ রেঞ্জার আবদুল্লাহ আল আমিন, বারিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা সুমন মিয়া ও র্যাপিড রেসপন্স বিডির সদস্যরা।
অভিযানে ১টি অজগর সাপ, ৪টি বনবিড়াল, ১টি গন্ধগোকুল, ১টি শিয়াল, ১টি বাজপাখি, ৫টি বানর ও ৪টি হরিণ জব্দ করা হয়।
এর মধ্যে শিয়াল ও বানরগুলো রাতেই গারো পাহাড়ের বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। ৪টি হরিণ চিড়িয়াখানার ইজারাদারের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
বাকি ১০টি প্রাণী বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে রাখা হবে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে, পরে সেগুলোর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী বনে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের শেরপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে গজনী অবকাশ কেন্দ্রের ভেতরে দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য এ মিনি চিড়িয়াখানা গড়ে তোলা হয়। এটি পরিচালনা করছিলেন ইজারাদার ফরিদ আহমেদ।
তবে তিনি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২-এর ৬ (১) ধারা লঙ্ঘন করে অনুমতি ছাড়া বন্যপ্রাণী আটকে রেখে তা দর্শনার্থীদের দেখিয়ে আসছিলেন।
ইজারাদার ফরিদ আহমেদ বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়ে চিড়িয়াখানাটি পরিচালনা করে আসছিলাম। বন বিভাগ জানিয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া বন্যপ্রাণী রাখা যাবে না। বুধবার বন কর্মকর্তারা প্রাণীদের তালিকা তৈরি করে। শুক্রবার রাতে লাইসেন্সবিহীন প্রাণীগুলো জব্দ করে নিয়ে যান। আমার কোনো আপত্তি নেই। ভবিষ্যতে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”
বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা জানান, বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। তাই এখান থেকে ১৭টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। জব্দকৃত প্রাণীগুলোকে কিছু দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে স্বাভাবিক বন্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে।