শেরপুরে তেল জাতীয় ফসল সরিষা আবাদে সফলতা প্রদর্শনের জন্য ৫ জন কৃষককে পুরষ্কৃত করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সোমবার (১৩ মে) দুপুরে শেরপুর খামারবাড়ী মিলনায়তনে কৃষকদের হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়। পুরষ্কারপ্রাপ্ত কৃষকরা হলেন-নালিতাবাড়ী উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের কৃষক মো. এমদাদুল হক, রামচন্দ্রকুড়া গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম, শালমারা গ্রামের দেলোয়ার হোসেন, সদরের কান্দা শেরীরচর গ্রামের সেকান্দর আলী ও কাজিরচর গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ। এরমধ্যে নিজের আবাদী ২ দশমিক ৮০ হেক্টর জমির মধ্যে ২ দশমিক ২০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করে ৩ হাজার ৫২০ কেজি তেলবীজ উৎপাদন করে প্রথম পুরষ্কার পেয়েছেন নালিতাবাড়ীর কৃষক মো. এমদাদুল হক। নালিতাবাড়ীর আরেক কৃষক রেজাউল করিম ৫ হেক্টর আবাদী জমির মধ্যে ৩ হেক্টরে তেলজাতীয় ফসল আবাদ করে ২ হাজার ৮৮০ কেজি তেলবীজ উৎপাদন করে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়া অপর ৩ জন কৃষক যুগ্মভাবে তৃতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন। পুরষ্কারপ্রাপ্ত কৃষকদের তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তেলবীজ উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য প্রণোদনা হিসেবে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়েছে। পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে শেরপুর খামারবাড়ীর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. সুকল্প দাস-এর সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবীর, জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা ড. রুবিনা আক্তার, বারি’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নার্গিস সুলতানা, প্রকল্পের মনিটরিং কর্মকর্তা খাইরুল আমান, প্রধান তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা ময়মনসিংহ ড. খালেদা ইয়সমিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলার ৫ উপজেলা থেকে আগত ২০ জন সফল চাষী এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে জেলায় আবাদকৃত বারি-৭ জাতের সরিষার চাষ পদ্ধতি ও সুবিধা সম্পর্কে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ করা হয় এবং সচিত্র প্রতিবেদন দেখানো হয়। সভাপতির বক্তব্যে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, শেরপুরের মাটি তেল জাতীয় ফসল সরিষা চাষে খুবই উপযোগী। অল্প দিনেই সরিষা কৃষকের ঘরে উঠে। আমন আবাদের পর একই জমিতে সরিষা এবং তারপর বোরো ধান চাষ করে কৃষক বাড়তি টাকা আয় করতে পারেন। চলতি বছর জেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৭২২ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষা আবাদ হয়েছে ১৮ হাজার ৫৬১ হেক্টর জমিতে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার মোস্তফা কামাল নামে একজন কৃষক ১৩ মেট্রিক টন সরিষা ভাঙ্গিয়ে ৫ মেট্রিক টন সরিষার তেল বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি করেছেন। যা এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছে। তিনি আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী সময়ে সকলকে উন্নত জাতের সরিষা আবাদ করে অধিক লাভবান হওয়ার পরামর্শ প্রদান করেন।