রবিবার , ২রা জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৪শে জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ঝুলে আছে রস ভর্তি কলস !

প্রকাশিত হয়েছে -

সরিষা ক্ষেতের সোনালি রঙ, শিশির ভেজা প্রকৃতির ঢং আর এতেই আঁচ করা যায় শীতের আছে অনেক সং। কিন্তু এতো অল্প কথায় এর অপরূপ সৌন্দর্য বুঝানো যাবে না কারণ এর যে সং এর অন্ত নেই। শীতের সকালে আবছা আলোয় প্রকৃতি থাকে ভেজা, এক চুমুক খেজুরের রস প্রাণকে করে তাজা। ঋতুবৈচিত্রের পালাক্রমে চলছে শীত। নানা রকম খাবার, ফুল-ফল, সবজি ও পিঠা পুলির আমেজ নিয়ে হাজির হয় শীতকাল।

শীতকালীন খাদ্য তালিকায় প্রথমেই আসে অতিপ্রিয় খেজুরের রস। কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালটা যেনও খেজুরের রস ছাড়া জমেই না। শীত ও খেজুরের রস যেনও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। রস হচ্ছে খেজুরের গাছ থেকে আহুত মুখোরোচক পানীয়।

কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। শহর তো নয়ই এমনকি গ্রামের মেঠো পথ থেকেও হারিয়ে গেছে খেজুর গাছ। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ঘর পর্যন্ত যদিও এই বিলুপ্তপ্রায় খেজুর গাছ আর রস নিয়ে হা-হুতাস চললেও কি করে আর কিভাবে এই গাছ সংরক্ষণ করা যায় এনিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। হয়ত এমন এক সময় আসবে, যখন খেজুর গাছ আর খেজুরের রসের কথা ভবিষ্যত প্রজন্ম শুধু বইয়ের পাতায় পড়বে, দেখতে বা স্বাদ নিতে আর পারবে না।

Advertisements

তবুও শেরপুরে চলতি পথে হঠাৎ করেই দেখা মিললো বিলুপ্তপ্রায় খেজুর গাছের। শুধু তাই-ই নয়, খেজুর গাছের গলায় ধরে ঝূলে রয়েছে খেজুরের রস জমা একটি কলস। কোন বাড়ি নয় বা কোন ফলজ বৃক্ষের বাগানে নয়, শহরের বটতলাতে জেলা প্রশাসনের অফিসার্স কোয়ার্টার বা ডরমেটরী ভবনের সামনে মাথা উঁচু করে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে খেজুর গাছটি। ঝুলে আছে রস ভর্তি কলস।

কাছে গিয়ে দেখা যায়, পুরো ডরমেটরী ভবনের সীমানাপ্রচীর জুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থাকলেও গাড়ি পার্কিং করার খোলা জায়গার মাঝখানে শুধু একটি মাত্র গাছ। আর সেটিই হলো এই বিলুপ্তপ্রায় খেজুর গাছ।

ঋতুবৈচিত্রের বাংলাদেশে ঘুরে ফিরেই আসে শীত। শীত এলেই মনে পড়ে যায়, খেজুর রসের কথা। আর রসের কথা মনে এলেই খেজুর গাছের প্রয়োজনীয়তা চোখে ভাসে। তাই, বিলুপ্তপ্রায় এই খেজুর গাছের সংরক্ষণ ও দেখভাল করার সময় এখনই। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য যেমন উদ্যোগ নিয়ে তাল বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি শুরু হয়েছে, ঠিক তেমনি সুস্বাদু অার পুষ্টিকর খেজুর রসের জন্য হলেও খেজুর গাছ রোপন আর পরিচর্যা করা জরুরী।