শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

মহিউদ্দিন চৌধুরীর জানাজায় লাখো মানুষ

প্রকাশিত হয়েছে -

সাধারণত চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জানাজা হয় জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ মাঠে। কিন্তু আজীবনের রাজনীতিবিদ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর জানাজা হলো আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত লালদীঘি মাঠে। লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে লালদীঘি মাঠ ভরে যায়। আশেপাশের সড়ক ও বাড়ির ছাদেও লোকজন দাঁড়িয়ে আজ শুক্রবার বাদ আছর শেষ করেন তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা। এটি স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জানাজার নামাজ বলে মন্তব্য করেন এখানে আসা লোকজন। জানাজা শেষে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে চশমা হিলের পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।

এর আগে বাদ জুমা দারুল ফজল মার্কেটে অবস্থিত চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে প্রথম জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজের আগে দলীয় নেতাকর্মীরা মহিউদ্দিন চৌধুরীর মরদেহে ফুল দেন। মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন চৌধুরীকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন পুলিশ সদস্যরা। জানাজায় দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী নেতা, সমাজসেবক ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। রাজনীতিবিদদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী প্রমুখ। শীর্ষ ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান প্রমুখ। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তার দাফন কাফনের যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় বলে জানান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সফিকুল মন্নান সিদ্দিকী।   এর আগে ভোরে হাসপাতাল থেকে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মরদেহ তার চশমা হিলের বাসভবনে নেওয়া হলে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের ভিড় জমে যায়। তাকে এক নজর দেখার জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে দাঁড়ান সবাই। এরমধ্যে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। মানুষের দীর্ঘ ভিড় ঠেলে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে একনজর দেখে অজোরে কাঁদতে কাঁদতে ফিরছিলেন চারজন মহিলা পরিচ্ছন্ন কর্মী। নমিতা নামের ষাটোর্ধ পরিচ্ছন্ন কর্মীকে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করতেই বলেন, আমাদের বাপ চলে গেছে। আমরা ছিলাম মেথর। মহিউদ্দিন আমাদের সেবক বানিয়েছিলেন। ভগবান তার কৃপা করুন। প্রসঙ্গত, শহরের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের একসময় মেথর বলা হতো। মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী তাদের নাম পরিবর্তন করে ‘সেবক’ রাখেন। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব জায়গায় তাদের জন্য বহুতল একাধিক ভবন নির্মাণ করে দেন। আওয়ামী লীগ নেতারা ছাড়াও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনিসহ বিএনপির একাধিক নেতা তার বাসায় যান।

0Shares