সোমবার , ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চিরবিদায় নিলেন সাংবাদিক তালাত মাহমুদ

প্রকাশিত হয়েছে -


আত্মীয়-স্বজন আর সহকর্মীদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় চিরবিদায় নিলেন শেরপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য, বিশিষ্ট কবি, সাংবাদিক ও কলামিস্ট তালাত মাহমুদ (৬৭)। ৪ মার্চ সোমবার সকালে শহরের তেরাবাজার জামিয়া সিদ্দিকিয়া মাদ্রাসা মাঠে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজাপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শেরপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, শেরপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শরিফুর রহমান, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মেরাজ উদ্দিন, ডা. সেকান্দর আলী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, সহসভাপতি এসএম শহিদুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুর রফিক মজিদ, মাসুদ হাসান বাদল, নূর-ই-আলম চঞ্চল, কবি আরিফ হাসান, হাফিজুর রহমান লাভলু, আইয়ুব আকন্দ বিদ্যুৎ প্রমুখ।

পরে দুপুর আড়াইটায় নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ দাফন করা হয়।

এর আগে তিনি গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় জেলা সদর হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলেমেয়েসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

Advertisements

এদিকে তার মৃত্যুতে শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আধার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাকন রেজা ও সাবিহা জামান শাপলা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানিক দত্ত, কবিসংঘ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ড. আবদুল আলীম তালুকদারসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

জানা যায়, বিগত শতাব্দীর আশির দশকের আলোড়নসৃষ্টিকারী কবি সাংবাদিক ও কলামিস্ট তালাত মাহমুদ ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ আগস্ট শেরপুরের চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রচণ্ড সাংগঠনিক কর্মক্ষমতার অধিকারী ও ক্ষুরধার লেখনীর আপোসহীন কলমসৈনিক তালাত মাহমুদ ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পাশ করার পর একইসাথে এলএলবি ও ময়মনসিংহ আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেন। তার পিতা মনিরুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধের একজন পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তালাত মাহমুদ জাতীয় লেখক কবি শিল্পী সংগঠন ‘লেকশি’ এবং ‘কবি সংঘ বাংলাদেশ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় সাড়াজাগানো ‘জিলবাংলা সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। তার প্রথম গ্রন্থ ‘স্বর্গের দ্বারে মর্তের চিঠি’ ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত হয়। নীলকন্ঠ কবি তালাত মাহমুদ সাপ্তাহিক জামালপুর বার্তার প্রথম বার্তা সম্পাদক, দৈনিক দেশবাংলার সম্পাদনা পরিষদ সদস্য, আজকের বাংলাদেশের সহকারী সম্পাদক, সাপ্তাহিক সফিয়ার সম্পাদক (অর্পিত দায়িত্ব), বিলুপ্ত সাপ্তাহিক জনকন্ঠ’র প্রধান সহকারি সম্পাদক, দৈনিক ঢাকা রিপোর্ট-এর প্রধান সহকারী সম্পাদক, সাপ্তাহিক শেরপুরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, সাপ্তাহিক পূর্বকথা’র সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি ও প্রধান সম্পাদক, সাপ্তাহিক ঝিনাই-এর উপদেষ্টা সম্পাদক, পল্লীকন্ঠ প্রতিদিনেব সহযোগী সম্পাদকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া ইত্তেফাক, ইনকিলাব, জাহান, সচেতনকন্ঠ, দশকাহনীয়া, কালের ডাক, পল্লীকন্ঠ প্রতিদিন, ভোরের আলো, শ্যামলবাংলা২৪ডটকম, শেরপুরটাইমসডটকম, বাংলার কাগজ, আজকের পত্রিকা, ভোরের আকাশসহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় তার অসংখ্য লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তার সম্পাদিত সাহিত্য পত্রিকা ‘সাহিত্য দর্পণ’ (১৯৭৩-১৯৮৬) ও ‘আমরা তোমারই সন্তান’ (১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রকাশিত)।