রবিবার , ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৩রা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নকলায় বসতবাড়ী ভেঙ্গে কৃষিজমির মধ্যদিয়ে নদী খনন কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত হয়েছে -

শেরপুরের নকলা উপজেলার চরঅষ্টধর ইউনিয়নের আদর্শগ্রামসহ বসতবাড়ী ও তিন ফসলি কৃষি জমির মধ্যদিয়ে নদী খনন কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে আদর্শগ্রামে ঘন্টাব্যাপি এই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে আদর্শগ্রামসহ মির্জাপুর, মুক্তচর, টাঙ্গাইল্লাপাড়া, পিয়ারপুর, জামতলা, চরঅষ্টাধার ও সেনেরচর গ্রামের বিভিন্ন বয়স ও পেশার সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশ গ্রহন করেন।

মানববন্ধন চলাকালে আদর্শগ্রামবাসীর পক্ষে শাহালম, রুবেল মিয়া, এরশাদ মিয়া, তোফাজ্জল হোসেন, মো. রুবেল ও আব্দুল খালেক; মির্জাপুর গ্রামবাসীর পক্ষে আজিজুল হক, মুক্তচর গ্রামবাসীর পক্ষে পচন মিয়া, টাঙ্গাইল্লাপাড়া গ্রামবাসীর পক্ষে মোজাম্মেল হক, পিয়ারপুর গ্রামবাসীর পক্ষে দেলোয়ার হোসেন দেলু, জামতলা গ্রামবাসীর পক্ষে বাদশা মিয়া ও ছাইফুল ইসলাম, চরঅষ্টাধর গ্রামবাসীর পক্ষে খালেক মিয়া ও সেনেরচর গ্রামবাসীর পক্ষে ইস্রাফিলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষ বক্তব্য রাখেন।

Advertisements

বক্তারা জানান, শেরপুর জেলার নকলা উপজেলাধীন ৮নং চরঅষ্টধর ইউনিয়নের নারায়নখোলা আদর্শগ্রামসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামে বসবাসকারী অধিকাংশ দরিদ্র বর্গাচাষী। বহ্মপুত্র নদের তীর ভাঙনের ফলে কোন একসময় গৃহহীন হয়ে পড়েছিলেন। পরে কালের বিবর্তনে নদের ওপার ভাঙনের ফলে আবার নিজের বসতভিটার জমি ও কৃষি জমি ফিরে পায়। তবে এই নদের ভাঙনের কারনে তাদের জমি সমূহ সরকারি খাতে চলে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা সবাই মিলে জমিগুলো সরকারের কাছে বন্দোবস্ত নিয়ে বসতবাড়ী নির্মাণ করেন এবং তিন ফসলি এসব আবাদি জমিতে কৃষি কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করে আসছেন। এছাড়া এই জমির কিছু অংশে সরকারের পক্ষ থেকে ভূমিহীনদের জন্য আদর্শগ্রাম করে দেওয়া হয়েছে; যেখানে বেশ কিছু ভূমিহীন পরিবার তাদের সন্তান-সন্ততি নিয়ে নিরাপদে বসবাস করছেন। সবমিলিয়ে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোই চলছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের বসতবাড়ী ও আদর্শগ্রামের মধ্য দিয়ে এমনকি বিপুল পরিমাণ তিন ফসলি কৃষি জমির মধ্যদিয়ে নতুন করে বহ্মপুত্র নদ খনন করার তথ্যটি প্রথমে বিশ্বাস না করলেও, পরে খননের কার্যক্রম শুরু দেখে তারা আজ দিশেহারা।

এলাকাবাসীর দাবি, তাদের বসতবাড়ী ও আদর্শগ্রামের মধ্য দিয়ে এমনকি বিপুল পরিমাণ তিন ফসলি কৃষি জমি নষ্ট করে অপরিকল্পিত ভাবে নতুন করে বহ্মপুত্র নদ খনন করা হলে অগণিত কৃষি নির্ভর পরিবার গৃহহীন হবেন, হবেন ভূমিহীন। খাদ্যের অভাবসহ ছেলে মেয়েদের পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে। যা নাকি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন। তাই সরেজমিনে তদন্ত ছাড়াই অপরিকল্পিত ভাবে জনগনের বসতবাড়ী ও আদর্শগ্রামের মধ্য দিয়ে এবং বিপুল পরিমাণ তিন ফসলি কৃষি জমি নষ্ট করে আবাদি জমির মধ্যদিয়ে নতুন করে বহ্মপুত্র নদ খনন করার কার্যক্রম বন্ধের জোরদাবি জানান তারা। তারা জানান, বর্তমানে বহ্মপুত্র নদটি যেদিতে বইছে, তা ঠিক রেখে নদীরক্ষা বাধ নির্মানের মাধ্যমে নিরিহ জনগনের বসতবাড়ী, আদর্শগ্রাম ও বিপুল পরিমাণ তিন ফসলি কৃষি জমি রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহনে সংশ্লিষ্টদের সুদৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী।