শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

হাত পাখা বানিয়ে পড়াশোনা করে ফরিদ পেলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ

প্রকাশিত হয়েছে -

হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান ফরিদ মিয়া। সংসারের চাকা ঘুরাতে যে নাকি সারাদিন মা বাবার সাথে কাজ করেছে। তৈরি করেছে হাত পাখা। হাত পাখা বিক্রি করে সংসার চালাতো তারা। আজ সেই ছেলেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি ইউনিটে মেধা তালিকায় ৪৯তম হয়েছে।

অদম্য ইচ্ছা আর দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থী উন্নয়ন সংস্থা (ডপস) এর সহায়তায় সাফল্য অর্জনকারী এ যুবক শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গোপালখিলা গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে ফরিদুল ইসলাম। ফরিদ মিয়ার বাবা একজন শ্রমিক। তার মা ফিরোজা বেগম গৃহিনী। জমির পরিমান শুধুমাত্র বসতভিটা। তারা পাচঁ ভাই বোন। শিশু বয়স থেকেই সংসারের ঘানি টানতে মা বাবার সাথে কাজ করতে হয়েছে তাকে। তৈরি করতে হয়েছে হাত পাখা। এরই ফাঁকে গোপাল খিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়া লেখা করতো ফরিদ মিয়া।

এক পর্যায়ে সংসারের টানাপোড়েনের কারণে তাকে নবম শ্রেনীতেই ছাড়তে হয়েছে পড়া লেখা। এমন এক সময় তার পাশে দাঁড়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দরিদ্র ও অসহায় শিক্ষার্থী উন্নয়ন সংস্থা (ডপস)।
ডপসের প্রতিষ্ঠাতা শাহীন মিয়া, বিএসপি ফরিদের পারিবারিক দুরাবস্থার চিত্র দেখে ডপস এর তালিকাভুক্ত করে তাকে আবার স্কুল মুখী করে এবং সহায়তা দেন বই, খাতা, কলমসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা। শুরু হয় ফরিদ মিয়ার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে চলা। ফরিদ মিয়া এবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি ইউনিটে মেধা তালিকায় ৪৯ তম হয়েছে।

Advertisements

স¤প্রতি কথা হয় স্বপ্ন বিজয়ী এ যুবক ফরিদ মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, শাহীন ভাইয়ের উৎসাহ উদ্দীপনা, সহায়তা আর দিক নির্দেশনায় আমি এতদূর আসতে পেরেছি। আমার বড় বোন লাকী আক্তার শেরপুর সরকারি কলেজে ইংলিশে অর্নাস ২য় বর্ষে আর ছোট দুই ভাইবোন শ্রীবরদীর গোপাল খিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়া লেখা করছে। সবার ছোট ভাই এবার পিএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। পড়ালেখার পাশাপাশি তারা প্রত্যেকে বাবা মাকে হাত পাখা বানানো কাজে সহায়তা করে। অল্প এ আয়ে ভাই বোনদের পড়া লেখার খরচ চালাতে তার মা বাবাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ফরিদ মিয়া জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং আরো পড়া লেখা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। এ টাকা জোগাড় করা তার বাবার পক্ষে কষ্টকর। এর পরেও সে হাল ছাড়েনি। তার প্রত্যাশা বিসিএস ক্যাডার হয়ে দেশ জাতির সেবা করা।

ডপসের প্রতিষ্ঠাতা শাহীন মিয়া, বিএসপি বলেন, ডপস মনে করে যে জাতি যত শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত। দেশে নানা কারণে অনেকে মাধ্যমিক পর্যায়ে স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ে। ডপস অনুসন্ধান চালিয়ে এসব ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে । এসব শিক্ষার্থীরা যেন উচ্চ শিক্ষা লাভ করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কাজ করতে পারে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন ডপস প্রতিষ্ঠাতা এবং সংশ্লিষ্টরা। ফরিদের সাথে যোগাযোগের মোবাইল নম্বর- ০১৯০৪৯৯১৭৫৫।