রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

সেলোয়ার একজন বিবেকহীন পিতা

প্রকাশিত হয়েছে -

সাবিনা সিদ্দিকী শিবা :
ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ
আমি মামলার চার্জ হিসেবে আপনার কোমল হাতের একটু পরশ চাই,হে হে
হোয়াট? এসব কি বলছেন স্যার, আমি আপনার মেয়ের বয়সী ছিঃ
মেয়ের বয়সী। মেয়ে তো নও,,
আমি ভাবতেও পারছি না।আপনি এতো,,,
প্লিজ অহনা কেউ জানতে পারবে না।
শুধু একটি রাত আপনি আমাকে দিন আমি কথা দিলাম,আপনার স্বামী কে আমি জামিনে মুক্তি করে আনবো।প্লিজ
অহনা কল্পনা করতে পারেনি বাবার বয়সের একজন পুরুষ তার চাহিদা পূরণের জন্য মেয়ের বয়সের একজনকে বেহায়া,নিলজ্জার মতো এমন প্রস্তাব দিতে পারে।
এখন বুঝতে পারছে টাকা হলেই এ শহরে সব হয় না।
এডভোকেট এর এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ার  কোন বিকল্প রাস্তা খুঁজে পেলো না।
কিছুক্ষণ চিন্তা করে দেখলো।এর চেয়ে সহজ উপায় আর কিছু নেই।একটি রাত তো কেউ জানবে না।কিন্তু স্বামী কে ছাড়িয়ে আনতে না পারলে তো একা-একা এতোবড় ফ্ল্যাটে থাকা আরও নিরাপত্তাহীন।
চোখের পানি মুছে বললো বলুন স্যার আমাকে কোথায় যেতে হবে।
তুমি ভীষণ স্মার্ট মেয়ে,আমি জানতাম তুমি রাজি হবে।
আমি সব ব্যবস্থা করে তোমাকে মোবাইলে ডিটেইলস জানিয়ে দিবো।
একদম টেনশন করনা অহনা।
তুমি আমাকে একটি রাত উপহার দেও।আমি তোমাকে এমন হাজার রাত উপহার দিবো তোমার স্বামী ফিরিয়ে দিয়ে।
অহনা কিছু না বলে এডভোকেট এর চেম্বার থেকে বেড়িয়ে গেলো।
বাসায় গিয়ে স্বামী ছাড়া বিছানায়  পড়ে হুহু করে কেঁদে উঠলো।কি করবে ও দিশে হারা।
খুট করে একটি মেসেজ আসায় অহনা দেখলো,মান্নান মোল্লা  এস এম এস।কোথায় যেতে হবে ডিটেইলস দেওয়া আজ রাতেই যেতে হবে।
রাগে ঘৃণার চোখ অন্ধকার দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু  এ ছাড়া কোন উপায় নেই।কোন রকম খাওয়াদাওয়া করে রাত নয়টায় বেরিয়ে গেলো হোটেল উদ্দেশ্য।
জীবনে এই প্রথম কোন পাপ কাজ।কলিজা ধরফর করছে।কিন্তু কোন উপায় নেই।হোটেলে রাত এগারটা মধ্যে পৌঁছে গেলো অহনা।
 সারারাত একরত্তি কোমল শরীরের উপর শকুনির তান্ডব চালিয়ে খুব ভোরে বিছানা ছেড়ে নামলেন।এক নরখাদক হায়নাদার মোল্লা।
 অহনার সারা শরীর অবস হয়ে আসছে।কোন মতো পরনের কাপড়চোপড় পড়ে।তার সামনে গিয়ে বললো,স্যার আমার কাজটা তো হয়ে যাবে?
আমার স্বামী কে তো জামিনে বাইরে আনবেন?
আরে যাও তো অবশ্যই আনবো,তুমি চিন্তা করও না।তবে হয়তো আরও দুই একবার আসতে হতে পারে, বলে নোংরা একটা হাসি ছড়িয়ে গেলো তার চেহারায়।
অসহায়ের মতো অহনা উঠে চলে যাওয়ার সময় মোল্লা দেখলেন অহনার পড়নের সেলোয়ার উল্টো পড়েছে।
তিনি দেখে অহনাকে বললো
মিসেস অহনা, আপনার সেলোয়ার উল্টো পড়েছেন ঠিক করে পড়ুন।
অহনা কিছু না বলে চোখ মুছে বেরিয়ে গেলো।
 কোথায় তোমরা আব্বু আম্মু এদিকে এসো বলেই আদরের একমাত্র মেয়ে রুমকি চিৎকার করে ডাকছে তাদের।
রুমকি এডভোকেট আব্দুল মান্নান মোল্লা বড় আদরের রাজকন্যা, লেখাপড়া শেষ করে, একটি প্রাইভেট ব্যাংকে জব করে।
গত পরশু বান্ধবীর সাথে ওদের বাসায় গিয়েছে বেড়াতে,সকালে মিষ্টি হাতে উপস্থিত হয়ে চেচামেচি শুরু করেছে।
মেয়ের খুশি দেখে দৌড়ে মেয়ে কাছে গিয়ে বললো,কি হয়েছে রুমকি মামনি।আজ এতো খুশি খুশি,হাতে আবার মিষ্টি ও।
কোন সুখবর?
হ্যাঁ আব্বু আজ আমি ভীষণ খুশি,এতোদিন আমার প্রোমোশন টা আটকে ছিলো।আজ স্যার ফোন করে বললো,আমার প্রোমোশন টা কনর্ফাম হয়েছে।আমাকে এ বছর প্রোমোশন দিয়েছে উপরমহল থেকে।কি যে খুশি লাগছে আজ।
 মিষ্টির বক্স ডাইনিং টেবিলের উপর রেখে,চোখে রাজ্যের ক্লান্ত অবসন্ন চেহারাটা নিয়ে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় এক নরখাদক বাবা দেখেন তার আদরের মেয়ে,তার রাজকন্যার,পরনের সেলোয়ার উল্টো করে পরা।তার বুকটা কেঁপে উঠলো। পিছন থেকে মেয়েকে ডাক দিতে গিয়ে ধুপ করে নিচে বসে পড়লেন।
হঠাৎ  অহনার সেলোয়ার উল্টো পড়ার কথা মনে পড়ে গেলো,,,,