সোমবার , ১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৩০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৪ঠা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নান্দাইলে মাদ্রাসার নিরাপত্তাকর্মী অধ্যক্ষের স্ত্রী, শ্যালিকা আয়া

প্রকাশিত হয়েছে -

ময়মনসিংহের নান্দাইলের জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের দেউলডাংরা নুরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক। এমপিওভুক্ত মাদ্রাসাটির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তাঁর শ্বশুর কাজী নুরুল ইসলাম। পাঁচ মাস আগে মাদ্রাসায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে অধ্যক্ষের স্ত্রী শামছুন্নাহার ও আয়া হিসেবে শ্যালিকা ছদরুন্নাহার নিয়োগ পেয়েছেন।

অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ পেলেও তাঁরা কাজ করেন না। অন্য লোক দিয়ে কাজ করানো হয়। সে জন্য তাঁকে ভাতাও দেওয়া হয়।

মাদ্রাসা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৩ সালে কাজী নুরুল ইসলাম দেউলডাংরা নুরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৭ সালে এটি এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে ৩৫০ জনের মতো শিক্ষার্থী এবং ১৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। কাজী নুরুল ইসলাম দেউলডাংরা মহিলা দাখিল মাদ্রাসারও প্রতিষ্ঠাতা। সেখানে তাঁর স্ত্রী সভাপতি, আরেক জামাতা মো. শহীদুল্লাহ্ অধ্যক্ষ।

Advertisements

সম্প্রতি মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, ৬০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটির অবস্থা জরাজীর্ণ। নেই কোনো সাইনবোর্ড। মাদ্রাসার পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে তিনটি টিনশেড ঘর। দক্ষিণ পাশের টিনশেডটি মাদ্রাসার অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহার হয়। ৩৫০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও অর্ধেকের কম শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত পাওয়া গেছে। মাদ্রাসার নিরাপত্তাকর্মী অধ্যক্ষের স্ত্রী শামছুন্নাহারকে পাওয়া যায়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া থাকার পরও লাকী আক্তার নামের এক নারী কাজ করেন। মাদ্রাসার তহবিল থেকে তাঁকে বেতন দিচ্ছেন অধ্যক্ষ। নিরাপত্তাকর্মী শামছুন্নাহার প্রতিদিন উপস্থিত থাকেন না। আয়া ছদরুন্নাহারেরও দেখা পাওয়া কঠিন। মাঝেসাজে মাদ্রাসায় গেলেও তাঁরা কাজ করেন না।

দেউলডাংরা নুরুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অধ্যক্ষের স্ত্রী মাঝেমধ্যে আসেন। তিনি অফিসকক্ষ থেকে বের হন না। অধ্যক্ষের সঙ্গেই বসে থাকেন। নিরাপত্তা দিতে তাঁকে কোনো দিন দেখা যায়নি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার শ্বশুর নিজে দুটি প্রতিষ্ঠান করেছেন। এখানে উনার মেয়েদের চাকরি দিয়েছেন।’

জানতে চাইলে নান্দাইল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম মুঠোফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়োগের সময় এ ব্যাপারে আমার আপত্তি ছিল। কীভাবে নিয়োগ হলো জানি না।’

আয়া থাকা সত্ত্বেও অন্য লোক দিয়ে কাজ করানো যাবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা কখনো সম্ভব না। যিনি নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁরই কাজ করতে হবে। বিষয়টি আমি দেখছি, খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’

#আজকের পত্রিকা