রবিবার , ২রা জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৪শে জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নালিতাবাড়ীতে কলেজছাত্রী জিদনীর মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের দাবীতে মানববন্ধন

প্রকাশিত হয়েছে -

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের সমাজকর্ম বিভাগেরর চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ও নালিতাবাড়ী পৌরশহরের বাসিন্দা তায়েবাতুন জিদনী (২৫) এর মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সোমবার (১২ জুন) সকালে উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। শহরের সেঁজুতি সাংস্কৃতিক একাডেমি ও বীরমুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের আয়োজনে এই মানববন্ধন পালিত হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে , গত মঙ্গলবার (৬ জুন) ময়মনসিংহ শহরের কাঁচিঝুলি এলাকার নাসা টাওয়ারের হোষ্টেলে রাতের আধারে তার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে। পরে বুধবার (৭ জুন) পুলিশ জিদনীর লাশ উদ্ধার করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ নিয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই মৃত্যুর আলামত হিসেবে পুলিশের কাছে জিদনীর ব্যবহৃত মুঠোফোন জব্দ করা আছে।

Advertisements

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কক্ষের ভেতরে জিদনীকে জানালার পাশে খাটের উপরে হাটু পেছন দিকে ভাঁজ করা বসা অবস্থায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে। লাশ জানালার গ্রীলের সাথে একটি ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচানো ছিল। কিন্তু জানালার গ্রীলের সাথে কি এভাবে আত্মহত্যা করা যায় ? সেটিই ভাবনার বিষয়। তাছাড়া এটি একটি রহস্যজনক মৃত্যু। যদি সে আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে এর পেছনে অব্যশই কারো না কারো প্ররোচনা রয়েছে। আমাদের বিশ্বাস জিদনী আত্মহত্যা করেনি। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। পরে আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। এর পেছনে কে দায়ী তা তদন্ত করে খুঁজে বের করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এ সময় বক্তব্য রাখেন, নবরুপী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি শ্যামল দত্ত, তারাগঞ্জ সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম খোকন, সেঁজুতি বিদ্যানিকেতনের প্রিন্সিপাল মুনীরুজ্জামান, প্রেসক্লাবে সভাপতি আবদুল মান্নান সোহেল, সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান সোহাগ, আতিকুর রহমান, অবনী অনিমেষ, জিদনীর শ্বশুড় আবুল হোসেন ও শাশুড়ী রাহিমা হুসাইন প্রমুখ।

জিদনীর মা হাসনা হেনা বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে যে কেউ আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। আমি চাই দ্রæত ময়নাতদন্তের প্রতবেদন দেওয়া হোক। সেটা দেখে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো। আমি চাইনা জিদনীর মত আর কারও মায়ের বুক খালি না হয়।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে। এখন সেই প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। তবে কারও প্ররোচনায় এই হত্যা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এছাড়া থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, নিহত তায়েবাতুন জিদনী নালিতাবাড়ী পৌরশহরের বাসিন্দা শিক্ষিকা হাসনা হেনা ও জয়নাল আবেদীনের কন্যা। জিদনীর স্বামী ইয়াসির আরাফাত গত চার মাস যাবত ফ্রান্সে বসবাস করছেন। জিদনী ময়মনসিংহ শহরের নাসিরাবাদ কলেজে সমাজকর্ম বিভাগের চতুর্থ বর্ষেও শিক্ষার্থী ছিলেন। সে ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলি মসজিদ রোড এলাকার নাসা টাওয়ারের হোষ্টেলে থেকে লেখাপড়া করতেন।