রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

গীবত হারাম ও কবিরা গুনাহ

প্রকাশিত হয়েছে -

এ এম আব্দুল ওয়াদুদ
গীবত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরনিন্দা করা, কুৎসা রটানো, পেছনে সমালোচনা করা, পরচর্চা করা, দোষারোপ করা, কারও অনুপস্থিতিতে তার দোষ অন্যের সামনে তুলে ধরা।গীবত’ অর্থ বিনা প্রয়োজনে কোন ব্যক্তির দোষ অপরের নিকটে উল্লেখ রাগীবত হল কোন মানুষের এমন কিছু বিষয় যা তার অনুপস্থিতিতে উল্লেখ করা, যা সে অপছন্দ করে, যদিও তা তার মধ্যে বিদ্যমান থাকে
ইসলামি শরিয়তে গীবত হারাম ও কবিরা গুনাহ।যারা অগ্র-পশ্চাতে অন্যের দোষ বলে বেড়ায় তাদের জন্য ইসলামে ধবংসের দুঃসংবাদ রয়েছে। (মুসলিম)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক এরশাদ করেছেন, আর তোমরা অন্যের দোষ খুঁজে বেড়াবে না’। (সূরা আল-হুজুরাত : ১২)। গীবতের সবচেয়ে উত্তম সংজ্ঞা দিয়েছেন রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায়, হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা কি জান গীবত কাকে বলে? সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই ভালো জানেন।

তিনি বলেন, তোমার ভাইকে তার অনুপস্থিতিতে এমনভাবে উল্লেখ করা যা সে অপছন্দ করে। তখন প্রশ্ন করা হলো, বলুন তো, আমি যা বলছি তা যদি সত্যই আমার ভাইয়ের মধ্যে বিরাজমান থাকে তাহলে কী হবে? তিনি বলেন, তুমি যা বলছ তা যদি সত্যই তার মধ্যে বিরাজমান থাকে তাহলে তুমি তার গীবত করলে । আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তাহলে তুমি তার মিথ্যা অপবাদ দিলে ।

গীবত করাগীবত শোনা সমান অপরাধঅনেকেই পরনিন্দাকে পাপ বা নিষিদ্ধ বলে মনেই করেন নামদ্যপান, চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার ইত্যাদি থেকেও মারাত্মকনিকৃষ্টতম পাপকবিরা গুনাহ হলো গীবতঅন্যান্য পাপ তওবা দ্বারা মাফ হয়; গীবতকারীর পাপ শুধু তওবা দ্বারা মাফ হয় না, যার গীবত করা হয়েছে, সে ব্যক্তি যদি মাফ করে, তবেই আল্লাহর কাছে মাফ পাওয়া যেতে পারেএকটি কবিরা গুনাহ কাউকে জাহান্নামে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট

Advertisements

গীবতের ক্ষতিসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো- যার গীবত করা হয় তার আমলনামায় গীবতকারীর সওয়াব চলে যায়৷ উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার কাছে মর্যাদার দিক দিয়ে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই লোক হবে, যাকে মানুষ তার অনিষ্টের ভয়ে ত্যাগ করেছে। [বুখারি, মুসলিম]
হযরত আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহি ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন মি’রাজের রাতে আমি এমন এক কওমের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলাম যাদের নখগুলো তামার তৈরী এবং তা দিয়ে তারা অনবরত তাদের মুখমণ্ডলে ও বুকে আচড় মারছে। আমি বললাম, হে জিবরীল ! এরা কারা? তিনি বললেন, এরা সেসব লোক যারা মানুষের গোশত খেতো অর্থাৎ, মানুষের গীবত করত এবং মানুষের ইজ্জতের উপর হামলা করত।” এবং তাদের মানসম্মানে আঘাত হানতো। সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৮৭৮।
লেখকঃশিক্ষার্থী ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা।