সোমবার , ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

মা !

প্রকাশিত হয়েছে -

মা!  মা- ছিলো আমার আরাধ্য। শত  জনমের প্রেম ছিলো, ছিল শত  জনমে মায়ার বন্ধন।এই ছোট্ট মা ডাক টা,ডাকতে না পারলে  কতটা দুঃখ,কতটা কষ্ট বুকের ভিতর দুমড়ে মুচড়ে যায় সেই বুঝে, যার দীর্ঘ ২৫ বছর মা ডাকার সাধ্য নেই।

আমার মা! হ্যাঁ আমাদের মা,মরহুমা মনোয়ার সিদ্দিকী। যার কোলে শুয়ে-বসে কাটিয়েছি আমার শৈশব, কৈশোরী কাল। আজ কেন যে হঠাৎ মায়ের মুখটা ভেবে উঠছে বার বার,মনের গভীর খাদ মনে হচ্ছে নিমজ্জিত হয়ে যাচ্ছি, একবার মা ডাকতে,একবার প্রাণ খুলে মা ডাকতে ইচ্ছে করছে।একবার তার শত মসল্লা ঘ্রাণ যুক্ত  মলিন আঁচলে মুখটি মুছতে। কত-শত বার মায়ে আঁচল  আমার গলায় জড়িয়ে বলেছি।তোমার শরীরে এতো সুন্দর ঘ্রাণ কেন মা? তুমি কোথায় যাবার সময় তোমার গায়ের ব্লাউজ খুলে আমাকে দিয়ে যাবে।আমি ঘ্রাণ  শুঁকবো। পাগলী,বলে মা সরে যেতো সামনে থেকে।হ্যাঁ  মা আজও তোমার পাগলী বড় হয়নি ,ব্যথা পেলে মাগো বলে চিৎকার করে উঠে।মা! ও মা তুমি শুনতে পাচ্ছ?

আমি তোমাকে ডাকছি,জান মা আজ আমার খুব মনে পরছে  ফেলে আসা স্মৃতি। তুমি যখন পান খেয়ে ঠোঁট টকটকে লাল করে রাখতে,আমাদের পড়াতে বসলে তোমার পানের চিপটি ছিটে আমাদের বইয়ের পাতায় কি দারুন নকশা তৈরি হতো,এমন সুন্দর নকশা তৈরী করার জন্য আজ কোন চিত্রকর খুঁজে  পেলাম না।কি সুন্দর লাগতো তোমার পান খাওয়া ঠোঁট দেখলে মনে হতো আমার কাছে  নারিকেল গাছের কোঠরি তে লুকিয়ে থাকা টিয়া পাখির ঠোঁটের মতো।মাগো, ওমা, তোমার কি মনে আছে তুমি যখন দুপুরে খাবার পর আয়েশ করে মুখে পান পুড়ে ভাত ঘুমের জন্য বিছানায় গা এলিয়ে দিতে, সাথে নিতে, আমাদের তিন বোনকে? কিন্তু  ওরা দু’জন ঘুমের  ভান করে ঘাপটি মেরে থাকতো কখন তোমার ঘুম হবে আর ওরা একছুটে বাহিরে চলে যাবে খেলার জন্য।

Advertisements

আজ আমার আরেকটি কথা ভীষণ মনে পড়ছে সে হলো,ঈদের দিন যে যার মতো নতুন কাপড় পড়ে ঘুরে বেড়াতো,আর তুমি কি করতে,নতুন পোশাক তো পড়তাম,আমার লম্বা চুল গুলোতে চুপ চুইপা করে নারিকেল তেল দিয়ে দুইটা বেনি করে দিতে।কি একটা কান্ড বলতো?এখন এসব মনে পরলে হাসি পায়।

মা! মাগো,কতদিন তোমার হাতে কিছু খাইনা,
খুব ইচ্ছে করে আমি তোমার মতো হই।কিন্তু শতজনমেও আমি তোমার মতো হতে পারবোনা।অত ধৈর্য্য আমার নেই।
তুমি তো চলে গেলে, একবার ভেবেছো,তোমাকে ছাড়া কতটা নিঃশ্ব আমরা?
ওপারে ভালো থেকো মা।আমিও চলে আসবো তোমার নিকট।,আল্লাহ পাক তোমাকে বেহেস্তের উচ্চ আসন দান করে তোমাকে,,,
মা
শীতের সকাল  বেলা গ্রামের বাড়ি গিয়ে,বেড়ার ঝাপটা খুলে,
এক ছুটে চলে যেতাম সদর গেইটে মুলে।
পাতিপাতি করে খুঁজে আনছি রান্না করতে সবজি,
মা যে রেঁধে রাখতেন,পাঁচফোড়ন দিয়ে
খেতাম ডুবিয়ে কব্জি।
শুকনো লংকা  আর গোটা কতক রসুনের কোয়া কুঁচি,
এতো মজা লাগতো আমার মা রান্না করতো যখন কচি কাঁঠালের মুচি।
ছ্যাঁত ছ্যাঁত গরম তেলে মা পিঁয়াজ মরিচ করে লাল।
বাগাড় দিতো পাঁচ মিশালী ঘন করে ডাল।

রাব্বি হাম হুমা কামা রাব্বানী ইয়ানি সাগিরা