সোমবার , ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

৩০ টাকায় মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন!

প্রকাশিত হয়েছে -

প্রথমবারের মত দেশে চালু হলো মোবাইল নম্বর ঠিক রেখে অপারেটর পরিবর্তন করার সুবিধা।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই নম্বর অপরিবর্তিত রেখে যেকোনো অপারেটরে যেতে পারবেন গ্রাহকেরা। এই এমএনপি সুবিধা নিতে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ খরচ হবে ৩০ টাকা।

মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

Advertisements

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, এটি আমাদের প্রস্তাব। অর্থ মন্ত্রণালয় চাইলে এটি আরো বাড়াতে বা কমাতে পারে। অপারেটররা হয়তো প্রতিযোগিতার জন্য বিনামূল্যে গ্রাহকদের এ সুবিধা প্রদান করতে পারে। অপারেটরদের এমএনপি লাইসেন্স পাওয়ার দ্বিতীয় বছর হতে সরকারকে সাড়ে ৫ শতাংশ হারে রাজস্ব দিতে হবে।

মঙ্গলবার বিটিআরসির সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও স্লোভেনিয়ার যৌথ কনসোর্টিয়াম ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেককে এ সেবা প্রদানের নোটিফিকেশন পত্র প্রদান করা হয়।

এসময় বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, কমিশনের বিভিন্ন বিভাগের কমিশনার, মহাপরিচালক এবং লাইসেন্সের জন্য নোটিফিকেশন প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা অনুমোদনও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবনাটি এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে উদ্যোগটি চূড়ান্ত হবে।

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মোবাইল নম্বর পোর্টেবিলিটি (এমএনপি) ব্যবস্থাটি চালাতে অপারেটরদের লাইসেন্স নিতে হবে। ১৫ বছরের জন্য এই লাইসেন্স দেয়া হবে। একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ত্রিশ টাকার বিনিময়ে নূন্যতম ৪০ দিনের জন্য অপারেটর পরিবর্তনের সুযোগ পাবে।

বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে, গত ১৫ অক্টোবর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে বিটিআরসি কর্তৃক লাইসেন্স প্রদানের পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে কমিশনের ২০৮তম সভায় সরকার পূর্বানুমোদন জ্ঞাপন করায় এমএনপি গাইডলাইনের সকল শর্ত পালন সাপেক্ষে ওই প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এরপর গত ০১ নভেম্বর ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেককে লাইসেন্স প্রাপ্তি সংক্রান্ত একটি নোটফিকিশেন পত্র ইস্যু করা হয়। লাইসেন্স প্রাপ্তির পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের মোবাইল গ্রাহকের কমপক্ষে ১ শতাংশ, ১ বছরের মধ্যে ৫ শতাংশ এবং ৫ বছরের মধ্যে ১০ শতাংশ-কে এ সেবার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। একজন সেবা গ্রহীতা ৩০ টাকার বিনিময়ে প্রতিবারের জন্য অপারেটর বদল করতে পারবেন।

লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য নোটিফিকেশন প্রাপ্ত ইনফোজিলিয়ান বিডি টেলিটেককে এমএনপি গাইডলাইনের শর্তানুযায়ী লাইসেন্স অ্যাকুইজিশন ফি ১০ কোটি টাকা, বাৎসরিক লাইসেন্স ফি ২৫ লক্ষ টাকা, রেভেনিউ শেয়ারিং (২য় বছর থেকে) ১৫ শতাংশ হারে, ব্যাংক গ্যারান্টি ১০ কোটি টাকা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে ২য় বছর থেকে বাৎসরিক নিরীক্ষাকৃত আয়ের ১ শতাংশ বিটিআরসিকে প্রদান করতে হবে ।

এমএনপি চালুর ফলে এক অপারেটরের নম্বরে অন্য অপারেটরের সংযোগ নেয়া যাবে। গ্রাহক যে অপারেটরের সেবা পছন্দ করবে, বিনা দ্বিধায় সেই অপারেটরের সংযোগ নিতে পারবেন। এ জন্য নিজের ফোন নম্বরটিও পাল্টাতে হবে না। এ সেবা প্রবর্তনের ফলে মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে গুণগত সেবা প্রদানের প্রতিযোগিতা এবং মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দেশে বিদ্যমান সব মোবাইল কোম্পানিকে এমএনপি ব্যবস্থা চালু করতে হবে বলে জানান তারানা হালিম। বর্তমানে বিশ্বের ৭২ টি দেশে এ সুবিধা চালু রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০১১ সালে এবং পাকিস্তানে এই সেবা ২০০৭ সাল থেকে চালু রয়েছে। ২০১২ সালে বাংলাদেশে এমএনপি বাস্তবায়নের প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সুত্র: বিডি২৪লাইভ/এআইআর