শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

কে কাকে সালাম দিবে

প্রকাশিত হয়েছে -

এ এম আব্দুল ওয়াদুদ
সালাম এমন একটি সম্ভাষণ যার মাধ্যমে একে অপরের কল্যাণ কামনা করা হয়।সালাম কে কাকে দিবে বা সালাম প্রদানের আদব কি তা নিয়েই আজকের আলোচনা।
ইসলাম এমন একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা যেখানে সমস্ত কিছু বিশদ বর্ণনা রয়েছে।কখন কি করতে হবে এবং কিভাবে করতে হবে।তেমনিভাবে সালাম বিনিময়েরও নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বয়ঃকনিষ্ঠ বয়োজ্যেষ্ঠকে, পদচারী উপবিষ্টকে এবং অল্পসংখ্যক অধিকসংখ্যককে সালাম দেবে। (বুখারি, হাদিস : ৬২৩১)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমরা তোমাদের কোনো ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করো, তাকে সালাম দাও; যদি তোমাদের উভয়ের মধ্যে কোনো গাছ কিংবা পাথর বা দেয়াল আড়াল করে তারপর আবার দেখা হয় তাহলে আবারও সালাম দাও।’

Advertisements

হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা ঈমানদার না হওয়া পর্য়ন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। আর যতক্ষণ না তোমাদের পারস্পরিক ভালোবাসা গড়ে উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না। আমি কি তোমাদেরকে এমন একটি কাজ বলে দেব না, যা করলে তোমরা একে অপরকে ভালোবাসতে লাগবে? (তা হচ্ছে) তোমরা নিজেদের মধ্যে সালাম প্রচার কর।’ (মুসলিম)

ছোট বড় নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে সালাম দেওয়া উচিত বড়রাও ছোটদের সালাম দিতে পারবে। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা রাসুল (সা.) দুটি শিশুর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাদের সালাম করেছিলেন। (মুসলিম, হাদিস: ২১৬৮)

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণিত, ‘এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ’সর্বোত্তম ইসলামী কাজ কী?’ তিনি বললেন, “(ক্ষুধার্তকে) অন্নদান করবে এবং পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সকলকে (ব্যাপকভাবে) সালাম প্রদান করবে।’ (বুখারী ৬২৩৬, মুসলিম ৩৯, তিরমিযী ১৮৫৫)

একবার এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। তখন তিনি বললেন, লোকটির জন্য ১০টি নেকি লেখা হয়েছে। এরপর অন্য এক ব্যক্তি এসে (একটু বাড়িয়ে) বললেন, ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লা ‘। তখন আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সালামের উত্তর দিয়ে বললেন, তার জন্য ২০টি নেকি লেখা হয়েছে। এরপর অন্য এক ব্যক্তি এসে (আরও একটি শব্দ বাড়িয়ে) বললেন- ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু’। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার (সালামের) উত্তর দিয়ে বললেন, লোকটির জন্য ৩০টি নেকি লেখা হয়েছে।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ, মেশকাত)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন দুই জন মুসলমানের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ হয়, সালাম-মুসাফাহা (হাতে হাত মেলায়) করে তখন একজন অপরজন থেকে পৃথক হওয়ার আগেই তাদের সব গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।’

সমাজ হতে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে আদর্শ সমাজ বিনির্মানে আল্লাহ তাআ’লা আমাদের পরস্পরের মাঝে সালামের ব্যাপক প্রচলন করার তাওফিক দান করুন।আমিন

লেখকঃশিক্ষার্থী ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা।