শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

হজ্ব ইসলামের একটি স্তম্ভ।। যার এক মাত্র প্রতিদান জান্নাত

প্রকাশিত হয়েছে -


এ এম আব্দুল ওয়াদুদ

ইসলাম ধর্মের মৌলিক পাঁচটি স্তম্বের অন্যতম একটি স্তম্ভ বা রোকন হচ্ছে হজ্ব।হজ্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাশীল ইবাদত।

নানাবিধ শিক্ষা ও তাৎপর্য ধারণকারী এই বিধানটিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর সামর্থ্যবান বান্দার জন্য ফরয ঘোষণা করে পবিত্র কোরআনের সূরা আল ইমরানে এরশাদ করেন-

Advertisements

وَ لِلهِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الْبَیْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ اِلَیْهِ سَبِیْلًا وَ مَنْ كَفَرَ فَاِنَّ اللهَ غَنِیٌّ عَنِ الْعٰلَمِیْنَ.

মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে,আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ গৃহের হজ্ব করা তার জন্য অবশ্যকর্তব্য। আর যে (এই নির্দেশ পালন করতে) অস্বীকার করবে তার জেনে রাখা উচিত যে, আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি সামান্যও মুখাপেক্ষী নন।(সূরা আলে ইমরান (৩) : ৯৭)

হজ্বের নানাবিধ বিষয়নিয়ে সর্বসাধারণের মনে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের প্রশ্ন।আজকে সেসকল বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।

হজ্ব মানে হচ্ছে সংকল্প করা,ইচ্ছা করা।ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে হজ্বের মাসের নির্ধারিত দিনসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে বাইতুল্লাহ ও সংশ্লিষ্ট স্থানসমূহ জিয়ারত ও বিশেষ কার্যাদি সম্পাদন করাই হচ্ছে হজ্ব। (কাওয়াইদুল ফিকহ)

হজ্বের এক মাত্র প্রতিদান জান্নাত: হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত; মহানবী (সঃ) বলেন; এক উমরাহ হতে অন্য উমরাহ অন্তরবর্তী কালীন সময় গুনাহের কাফ্ফারা হয়। আর মাবরূর (গৃহীত ) হজ্বর একমাত্র প্রতিদান হল জান্নাত। (বুখারী ও মুসলিম)

মুসলিম শরিফের বর্ণিত হাদিসে রাসূল সা: বলেছেন, ‘হে মানব সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ্ব ফরয করেছেন।

সুতরাং তোমরা হজ্ব পালন করো।’ সামর্থ্যবান ও সেখানে যেতে সক্ষম মুসলিম হজ্ব পালন না করলে তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা আছে। হাদিসের ভাষায়, ‘আল্লাহ তাআলা যাকে হজ্ব পালনের সামর্থ্য দিয়েছেন অথচ সে হজ্ব না করে মৃত্যুবরণ করে, তা হলে সে দোজখের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিতে পতিত হবে’ (মিশকাত)।

হজ্ব ফরয হওয়ার পর তা পালনে জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা অব্যাহত রাখা মুমিন বান্দার একান্ত্য কর্তব্য।

لَبّيْكَ اَللّٰهُمّ لَبّيْكَ، لَبّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبّيْكَ، إِنّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لاَ شَرِيْكَ لَكَ.

আমি হাজির, হে আল্লাহ! আমি হাজির। আমি হাজির, আপনার কোনো শরীক নেই, আমি হাজির।নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা ও নিআমত আপনারই এবং সকল রাজত্ব। আপনার কোনো শরীক নেই।

শুভ্র সফেদ কাপড় গায়ে জড়িয়ে মহান প্রভুর ঘর বাইতুল্লাহ এর সামনে গিয়ে লাব্বাই আল্লাহুম্মা লাব্বাইক বলে হাজিরা দেওয়ার বাসনা প্রতিটা মুমিন মুসলমানের হৃদয়ের একান্ত্য কামনা।

মুমিনের হৃদয় বিশ্বজাহানের মালিকের সামনে হাজিরা দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হবেই বা নাকেন

যে ব্যক্তি একমাত্র অল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ্ব করে এবং কোনো অশ্লীল কাজ বা গুনাহে লিপ্ত হয় না, সে যেন সদ্যভূমিষ্ঠ শিশুর ন্যায় নিষ্পাপ হয়ে বাড়ী ফেরে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৫২১

এমন ঘোষণা কি আর কোন জায়গায় যাওয়ার বেলাই মিলে।

হজ্বের বিধান হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর যুগ থেকেই শুরু হয়েছিলো।হজ্ব মুসলিম জাতির এক মহা সম্মেল।যেখানে বিশ্বের নানা দেশ হতে, নানা বর্ণের মানুষের একত্রিতএকত্রিত হয় শুধু মাত্র আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির জন্য।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হজ্জ্বে মাবরূর দান করুন। যার প্রতিদান হচ্ছে এক মাত্র প্রতিদান জান্নাত।

লেখকঃ শিক্ষার্থী, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা।