শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

জুমার দিনের বিশেষ আমল

প্রকাশিত হয়েছে -


এ এম আব্দুল ওয়াদুদ

যে দিনগুলোতে সূৰ্য উদিত হয় তন্মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিন হচ্ছে, জুমার দিন।কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় এই মর্যাদাপূর্ণ  দিনের বিশেষ কিছু আমলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।আজ জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমলের কথা আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।

জুমার দিন জুমার নামাজের জন্য যে যত তাড়াতাড়ি মসজিদে আসবে সে তত বেশি সওয়াব পাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন জুমার দিন আসে ফেরেশতারা মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রথম থেকে পর্যায়ক্রমে আগন্তুকদের নাম লিখতে থাকে। যে সবার আগে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি উট সদকা করে। তারপর যে আসে সে ওই ব্যক্তির মতো যে একটি গাভী সদকা করে। তারপর আগমনকারী মুরগি সদকাকারীর মতো। তারপর আগমনকারী একটি ডিম সদকাকারীর মতো। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে বের হন, তখন ফেরেশতারা তাদের দফতর বন্ধ করে দেন এবং মনোযোগ  দিয়ে খুতবা শুনতে থাকেন। (বুখারি : ৮৮২)

Advertisements

এক হাদিসে নবী করিম (সাঃ) জুমার দিনে স্বয়ং তাঁর উপর দরুদ পাঠ করতে বলেছেন বান্দদের।
হাদিসটিকে নবী করিম (সাঃ) এরশাদ করেন,তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস নম্বর ১০৪৭)।

হাদিসে বর্ণিত জুমার দিনের বিশেষ কিছু আমল হচ্ছেঃ
১.গোসল করা।যাদের ওপর জুমা ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল (সাঃ) ওয়াজিব করেছেন।
২.উত্তম পোশাক পরিধান করে জুমা আদায় করা। (ইবনে মাজাহ)
৩.সুগন্ধি ব্যবহার করা।
৪.মিসওয়াক করা।
৫.গায়ে তেল ব্যবহার করা। (বুখারি)
৬.মুসল্লিদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা।
৭.আগেভাগে মসজিদে যাওয়া।
৮.মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা।
৯.জুমার দিনে বিশেষ সময়গুলোতে দোআর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া।
১০.মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা।
১১.ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা।
১২.জুমার দিনে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করা।
১৩.জুমার দিন ও জুমার রাতে বেশি বেশি দুরুদ পাঠ।

জুমার দিনে গোসল করার গুরুত্ব সম্পর্কে নবী করিম (সাঃ) এরশাদ করেন,কোনো পুরুষ যখন জুমার দিন গোসল করে, সাধ্যমত পবিত্রতা অর্জন করে, তেল ব্যবহার করে বা ঘরে যে সুগন্ধি আছে তা ব্যবহার করে, তারপর (জুমার জন্য) বের হয় এবং (বসার জন্য) দুই জনকে আলাদা করে না, এরপর সাধ্যমত নামায পড়ে এবং ইমাম যখন কথা বলে তখন চুপ থাকে, তাহলে অন্য জুমা পর্যন্ত তার (গুনাহ) মাফ করা হয়।

জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠের ফজিলতঃ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার পায়ের নিচ থেকে আসমান পর্যন্ত নূর প্রজ্জ্বলিত হবে এবং কিয়ামতের দিন তার জন্য উজ্জ্বল হবে। আর দুই জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে।’ (সূত্র : তাফসিরে ইবনে কাসির: ৬/৩৯৮)
তাই আমাদের উচিত, প্রতি জুমার দিন এই সুরার তিলাওয়াত করাকে অভ্যাসে পরিণত করা। কারণ এই সুরাটি নিয়ম করে প্রতি জুমায় তিলাওয়াতের উপকারিতা হলো, কেউ প্রতি জুমায় এই সুরা তিলাওয়াত করলে এক জুমা থেকে অন্য জুমার মধ্যবর্তী সময় তার জন্য নূর প্রজ্জ্বলিত করে রাখা হয়। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দুই জুমা পর্যন্ত নূর প্রজ্জ্বলিত হবে।’ (সুনানে দারিমি, হাদিস : ৩৪০৭)
মর্যাদাপূর্ণ এই দিনে আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি আমল করার তাওফিক দান করুন,আমিন।

লেখকঃশিক্ষার্থী
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা।