সোমবার , ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

কালের বিবর্তনে ঈদ আনন্দের একাল সেকাল

প্রকাশিত হয়েছে -


ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে উৎসব। ঈদ বছরে দুটো। ঈদ-উল- ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর খুশি আর আনন্দের মধ্য দিয়ে ঈদ-উল-ফিতর অনুষ্ঠিত হয়। বাংলার মুসলমানের ঘরে ঘরে ঈদের আমেজ বিরাজ করে। ছোট ছোট ছেলে মেয়ে, কিশোর কিশোরী, যুবক যুবতী, আবাল, বৃদ্ধ বনিতা সবার মনে এক আনন্দানুভুতি বিরাজ করে। এছাড়া এদেশের সকল ধর্মের মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করে।

এ উৎসবটা যেন সকল ধর্মের মানুষের মনে অনাবিল আনন্দ আর খুশি বয়ে আনে। ঈদের দিন সকালে ধর্মপ্রান মুসলমানরা নতুন জামা পরিধান করে ঈদগাহ মাঠে ও মসজিদে ঈদের নামায আদায় করে। এছাড়া, সকল বয়সের নারী পুরুষ নতুন নতুন জামা কাপড় পরিধান করে ঈদের খুশিতে মেতে উঠে। সকলের ঘরে ঘরে ফিরনি, সেমাই, কুরমা  পোলাও রান্না হয়। ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা  হৈ হুল্লোর করে এ বাড়ি ও বাড়ি এবং বিনোদন কেন্দ্রে গিয়ে আনন্দ উপভোগ করে।

সেকালে ঈদের দিনে খুব একটা আনন্দ হতো না। অভাব অনটন যেন সকলের ঘরে ঘরে লেগেই থাকতো। যাদের সামর্থ থাকতো তারাই নতুন জামা কাপড় ক্রয় করতো। ঈদের সকালে সেমাই খেয়ে ঈদগাহ মাঠ ও মসজিদে গিয়ে ঈদের নামায আদায় করে বাড়ি ফিরে আসতো।  উঠতি বয়সের ছেলেরা দল বেধে সিনেমা দেখতে যেতো। সে সময় সিনেমা হলগুলোতে ছিল উপচে পরা ভিড় । ঈদে কোন সিনেমা হলে কোন কোন ছবি মুক্তি পাবে তা নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আলোচনার ঝড় বইতো। সবার আগে হলে প্রবেশ করার জন্য চলতো টিকিট কাটার প্রতিযোগিতা।

Advertisements

কালের বিবর্তনে মানুষের অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো আর্থিক স্বচ্ছলতা। এখন প্রতিটি পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেকারণে চাহিদা বৃদ্ধিসহ রুচির পরিবর্তন হয়েছে।

বর্তমানে প্রায় সকলের মধ্যে নতুন কাপড় ক্রয়ের  প্রতিযোগিতা চলে। কে কার চেয়ে ভালো মানের জামা কাপড় ক্রয় করবে বেশি টাকা দিয়ে। তবে নিম্ন মধ্যবিত্তরা অনেকেই সাধ্যের মধ্যেই কেনাকাটা করে। তাদের ভিতরে প্রতিযোগিতা নাই বললেই চলে। এসময় শহর ও গ্রামের বিপনি বিতানগুলোতে থাকে চোখে পড়ার মতো উপচে পড়া ভিড়। এদের মধ্যে সিংহ ভাগই ছোট ছোট ছেলে মেয়ে ও মহিলা। যাদের টাকা পয়সা বেশি তারা নামিদামি দোকানে গিয়ে কেনাকাটা করে। আর যাদের সামর্থ কম তারা ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় করে। এসময় দোকানীরা ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্শনের জন্য রং বেরঙ্গের পসরা সাজিয়ে রাখে।

ঈদের দিনে বিত্তবানদের ঘরে ঘরে ভালো মানের খাবার রান্না হয়। তারা বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত করে খাওয়ায়। আর নিম্ন মধ্যবিত্তরা সাধ্য মতো রান্নাবান্না করে সম শ্রেণির আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের দাওয়াত করে খাওয়ায়।
সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ  ভ্রাতৃত্তপুর্ণ সম্পৃতির মধ্য দিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করে।