মঙ্গলবার , ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

ঘুরে ঘুরে ব্লাড প্রেসার মেপেও জীবন চলে না ফরিদের

প্রকাশিত হয়েছে -

ফরিদ আহমেদ- জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার প্রাণান্ত চেষ্টারত এক হতদরিদ্র মানুষ। সহায়-সম্বল না থাকায় আর্থিক অনটনে সংসারের দৈন্যদশার পরও তিনি কারও কাছে হাত পাততে অভ্যস্ত নন। যে কারণে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের ব্লাড প্রেশার মাপার মতো এক অভিনব পেশা বেছে নিয়ে জীবন সংসারের চাকা ঘুরানোর চেষ্টায় নিয়োজিত রেখেছেন নিজেকে। কিন্তু তাতেও ওষ্ঠাগত তার জীবন।

বুধবার দুপুরে কথা হয় শেরপুরের নকলা উপজেলার বানের্শ্বদী গ্রামের ভূমিহীন হতদরিদ্র পরিবারের এক সদস্য ফরিদ আহমেদের সাথে। কথোপকথনে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে এসএসসি পাস করা ফরিদ পরবর্তীতে কলেজে ভর্তি হয়েও অর্থের অভাবে আর পড়ালেখা করা তার সম্ভব হয়ে উঠেনি। ওই অবস্থায় ফরিদ তার পিতা ইসরাফিল মিয়া ও মাতা সফুরা খাতুনের মৃত্যুর পর অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েন। ফলে জীবিকা নির্বাহের তাগিদে এলাকায় বাড়ি বাড়ি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে বেকার জীবন অতিবাহিত করার এক পর্যায়ে ১৯৯৬ সনের দিকে স্থানীয় নাসরিন বেগমকে বিয়ে করে তাদের সংসারেই চলে যান।

কিছুদিন পর শশুর বদিউজ্জামানেরও মৃত্যু হলে তার সংসারে যোগ হয় শাশুরি আঞ্জুমান আরা। অন্যদিকে তাদের দাম্পত্য জীবনে জন্ম নেয় ২ ছেলে নাজমুল ও লোকমান। ২ সন্তানের জন্মের পর থেকে ৫ সদস্যের সংসার চালাতে একেবারেই কঠিন অবস্থায় নিপতিত হন ফরিদ। যে কারণে রাতে টিউশনির পাশাপাশি মাঝে-মধ্যে এলাকাতেই দিনমজুরির কাজ করতেও বাধ্য হয়েছেন। এক পর্যায়ে তিনি সংসারের চাকা ঘুরাতে ভিন্ন পেশা বেছে নিতে একটি এনজিও থেকে স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর ওই এনজিও’র দেওয়া একটি ব্লাড প্রেসার মাপার যন্ত্র নিয়ে তিনি জেলা-উপজেলা শহরের বিভিন্ন জায়গাসহ অফিস-আদালত, দোকান-পাট, স্কুল-কলেজ, বাসা-বাড়িতে পায়ে হেঁটে হেঁটে জনপ্রতি ৫-১০ টাকা নিয়ে মানুষের ব্লাড প্রেসার মাপার পেশায় জড়িয়ে পড়েন।

Advertisements

কোন কোন সময় মানবিক কারণে কাউকে বিনা পয়সায় প্রেসারও মেপে দেন তিনি। আর ওই কাজ করে ফরিদ দৈনিক একসময় ২-৩শ টাকা পেলেও এখন আর সেটাও জুটে না। তিনি শারীরিক অনেক সমস্যা নিয়েও জীবনের সাথে যুদ্ধ করে ওই পেশায় থাকলেও এখন চরম ওষ্ঠাগত তার জীবন। ভ্রাম্যমাণ ব্লাড প্রেসার মেপেও মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে পরিবারের লোকজনসহ তাকে।
ফরিদ আহমেদের ভবিষ্যত ইচ্ছা তিনি এক বৎসর মেয়াদী পল্লী চিকিৎসক ট্রেনিং করার। আর সেটা সম্ভব হলে তিনি একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে পারবেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে সেটাও তার পক্ষে এখন আর সম্ভব নয়।

তবে কোন প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকসহ সংশ্লিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানে তার একটি চাকরি হলে সেই উপার্জিত অর্থ দ্বারা বাকি জীবনটা সংসারের চাকা টেনে যাওয়া সম্ভব হত তার। এজন্য প্রয়োজন মানবিক সহায়তা। নিরন্তর জীবন যুদ্ধে থাকা হতদরিদ্র ফরিদের প্রতি সমাজের স্ব-হৃদয়বান ও দানশীল ব্যক্তি বা আমাদের কেউ কি পারি না সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দিতে? এজন্য যোগাযোগ করতে পারেন : ফরিদ আহমেদ, মোবাইল-০১৯৫৩-২৪৩৯০৩, ডাচবাংলা মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট নং-০১৯৫৩-২৪৩৯০৩২।