রবিবার , ২রা জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৪শে জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

৪ হাজার টাকায় মিলে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার সনদ

প্রকাশিত হয়েছে -

সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার সনদ। ছবি- সংগৃহীত

মাত্র ৪ হাজার টাকা হলেই পেয়ে যাচ্ছে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র। ভাতা পাওয়ার লোভ দেখিয়ে এমন প্রতারণা করে যাচ্ছে ‘৭১-এর সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন।

এ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ঠিকানা ও সরকারি নিবন্ধন সনদে উল্লেখ নেই। কেন্দ্রীয় কোনো অফিস নেই। এমনকি ভুয়া সংগঠনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে কয়েকজন সদস্যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায়।

সরেজমিন গিয়ে উপজেলার অনেকের কাছেই সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার সনদ পাওয়া যায় এবং ওই সংগঠনের দেওয়া ছবি সম্বলিত সহযোগী মুক্তিযোদ্ধার আইডি কার্ড রয়েছে। সদস্য হওয়া ও সনদপত্র, আইডি কার্ডের বিনিময়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সনদপত্রে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কোনো ঠিকানা, ফোন নম্বর ও সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত কিনা তা উল্লেখ নেই। সনদ প্রদানকারী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যানের নাম, পদবি, স্বাক্ষর সিলমোহর রয়েছে।

Advertisements

কেন্দুয়া উপজেলায় ভুক্তভোগী বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা স্থানীয় প্রতিনিধির মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ওই সনদ ও আইডি কার্ড নিয়েছেন। ভাতা পাওয়ার লক্ষ্যে আইডি কার্ডধারীদের এখন গেজেটেড ভুক্তির জন্য ২০ হাজার টাকা ও আরও বেশি টাকা জমা দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছে। কারণ ডিসেম্বরের মধ্যে গেজেটেড হয়ে যাবে। অন্যথায় ভাতা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক অমলেশ চন্দ্র পণ্ডিত (সনদ নং-৫৯৫৮) বলেন, আমি ৪ হাজার টাকা জমা দিয়ে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা সদস্য হয়েছি। এ সংগঠনটির ঢাকায় কোনো কেন্দ্রীয় কার্যালয় নেই। বিভিন্নভাবে তথ্য নিয়ে জেনেছি এটা ভুয়া সংগঠন। ভাতা পাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সরদার গোলাম মোস্তফা মোবাইলে বলেন, নিবন্ধন স্থগিত আছে। তবে নিবন্ধনের সব কাগজপত্র আছে। সদস্য হওয়ার জন্য সদস্য ফি বাবদ ১ হাজার ২৭১ টাকা নেওয়া হয়ে থাকে। অতিরিক্ত টাকা নিয়ে থাকলে আমার জানা নেই। আমার প্রতিপক্ষ কিছু লোক সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে টাকা নিয়ে প্রতারণা করছে। যারা প্রতারণা করে মোটা অংকের টাকা নিচ্ছে তাদের জিজ্ঞাসা করুন। গেজেটেডভুক্ত করতে হলে টাকা লাগবে।

কেন্দুয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক আকন্দ বলেন, সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা নামে কোনো সংগঠন নেই। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া। স্থানীয় কতিপয় কয়েকজন প্রতিনিধি আছে তারা মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে; যা এক ধরনের প্রতারণা।

কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মইনউদ্দিন খন্দকার বলেন, এ ধরনের সংগঠনের নাম শুনিনি। এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।

#বার্তা বাজার