শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

দেশে পানিতে ডুবে ১৮ মাসে ১৪০২ জনের মৃত্যু, ৮৩ শতাংশই শিশু

প্রকাশিত হয়েছে -

:হাকিম বাবুল:

পানিতে ডুবে গত ১৮ মাসে সারাদেশে ১ হাজার ৪০২ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। তাদের মধ্যে শিশুর স্যংখাই হলো ১ হাজার ১৬৪। যা মোট মৃত্যুর ৮৩ শতাংশ। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই)  বিকেলে সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চূয়াল কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরেছে গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’। ওই কর্মশালায় বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রাপ্ত প্রবণতাগুলোও উপস্থাপন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের যথাযথ নজরদারি না থাকায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পানিতে ডোবার ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ শিশু বড়দের অগোচরে বাড়ি সংলগ্ন পুকুর বা অন্য জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়। এসময় বলা হয়, সাধারণত পানিতে ডুবে মৃত্যুর সবগুলো ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে আসেনা। দেশে জাতীয়ভাবে পানিতে ডুবে মৃত্যু নিয়ে কোনো তথ্যব্যবস্থা না থাকায় এর প্রকৃত চিত্রও উঠে আসেনা। গেøাবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহযোগিতায় গণমাধ্যম ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’ গণমাধ্যমে প্রকাশিত ঘটনা থেকে পানিতে ডুবে মৃত্যুর এসব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৭ সালে প্রকাশিত প্রিভেন্টিং ড্রাওনিং : অ্যানইমপ্লিমেন্টেশন গাইডের উল্লেখ করে স্থানীয় পর্যায়ের মানুষজনকে সম্পৃক্ত করে দিবাযত্ন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে। এছাড়া পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু রোধে পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি ও জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করার উপর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সুপারিশ করেছে।

সমষ্টির পরিচালক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মীর মাসরুর জামান স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম ও স্থানীয় পর্যায়ের অনলাইন নিউজ পোর্টালে ২০২০ সালের পহেলা জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৮৭৫টি ঘটনার কথা প্রকাশিত হয়েছে। এসব ঘটনায় সারাদেশে ১ হাজার ১৬৪ শিশুসহ মোট ১ হাজার ৪০২ জন ব্যক্তি পানিতে ডুবে মারা গেছে। তন্মধ্যে চার বছর বা কম বয়সী ৫১৪ জন, ৫ থেকে ৯ বছর বয়সী ৪৪৮ জন, ৯-১৪ বছরের ১৫৭ জন এবং ১৫-১৮ বছরের ৪৫ জন। ২৩৮ জনের বয়স ১৮ বছরের বেশি। নিহতদের মধ্যে ৫০৬ জন নারী। এদের মধ্যে কন্যাশিশু ৪৫০ জন। পুরুষ মারা যায় ৮৯০ জন, যাদের মধ্যে ৭০৮ জন শিশু। প্রকাশিত সংবাদ থেকে ছয়জনের লৈঙ্গিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দিনের প্রথম ভাগে অর্থাৎ সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ৫৮৮ জন এবং দুপুর থেকে সন্ধ্যার আগে ৫৪৫ জন মারা যায়। এছাড়া সন্ধ্যায় ২৩৫ জন মারা যায়। ২২ জন রাতের বেলায় পানিতে ডোবে। ১২ জনের মৃত্যুর সময় প্রকাশিত সংবাদ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ সময়ে ৯৭টি পরিবারের ২৩৮ জন সদস্য পানিতে ডুবে মারা যায়। যাদের মধ্যে শিশুর সঙ্গে ভাই অথবা বোন সহ ১১৮ জন, বাবা-মা সহ ১৯জন, দাদা-দাদি বা নানা-নানি সহ ৪ জন, চাচাত বা খালাতো ভাই বা বোন সহ ৮১ জন, চাচা-খালা সহ ১৭ জন মারা যায়।

Advertisements

(শেরপুর জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক কালেরকণ্ঠ/চ্যানেল আই)