মঙ্গলবার , ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

শেরপুর পৌরসভার ময়লার ভাগাড়ে জনদুর্ভোগ

প্রকাশিত হয়েছে -

প্রায় দেড়শ বছরের পুরনো শেরপুর পৌরসভাটি আজও  নানা সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে শহরের নবীনগর মহল্লার শেরপুর-ময়মনসিংহ-ঢাকা বাস টার্মিনাল থেকে শহরের ঢুকার পথে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। তাই পৌরবাসীসহ শহরে আসা নতুন ব্যক্তিদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও আজও গড়ে উঠেনি পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার কোনও নির্দিষ্ট স্থান।

জানা গেছে,  প্রায় এক যুগ আগে ঢাকা-শেরপুর বাস টার্মিনালের কাছে প্রধান সড়ক সংলগ্ন গৃর্দানারায়ণপুর এলাকার আমানকুড়া বিলের একাংশে পৌরসভার পাইকারি কাঁচা বাজার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাই বিলের ওই অংশ মাটি বা বিট বালু না ফেলে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পৌরসভার এমন সিদ্ধান্তের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে পৌরবাসীসহ ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ। এ দুর্গন্ধের হাত থেকে বাঁচতে বার বার অভিযোগ করা হলেও কোনও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে পৌরবাসীর অভিযোগ। এই ভাগাড়ের পাশেই রয়েছে শেরপুর জেলা দায়রা জজের বাস ভবন, একটি স্বনামধণ্য কিন্ডার গার্টেন স্কুল, একটি হকার্স মার্কেট এবং প্রায়  ১০০ মিটার দূরে রয়েছে শেরপুর সদর থানা ।

এই ময়লার ভাগাড়টি গরু, কুকুর ও বিড়ালসহ বিভিন্ন পশু-পাখির বিচরণ ক্ষেত্রও হয়েছে। এখানে আবর্জনা ফেলার কারণে শুধু দুগন্ধই নয় এসব পশু-পাখির মাধ্যমে ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রোগ।

Advertisements

গৃর্দানারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা ব্যাংকার আনিসুর রহমান বলেন, ‘এ ময়লার ভাগাড়ের কারণে আত্মীয়স্বজন তার বাসায় আসতে চায় না। ছেলেমেয়েরা স্কুলে গেলে বন্ধুবান্ধব তাদের টিপ্পনী কাটে। এতে শিশুদের মনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আমরা চাই, এটা শহরের বাইরে কোথাও স্থানান্তর করা হোক।’

গৃর্দানারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা শিক্ষিকা আঞ্জুমান আরা যুথী বলেন, আমাদের বাসার কাছেই আমুনকুড়া বিলকে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় বানিয়েছে পৌরসভা। সেখান থেকে এত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে যে রাস্তাঘাটে চলাচল করা যায় না। আমরা বাসাবাড়িতে থাকতে পারি না। বৃষ্টি হলে এখানকার ময়লা পানি বাড়িতে এসে ঢুকছে। গন্ধে ঘরেও থাকা যায় না। এখন আমাদের বাড়িতে বসবাস করা কষ্ট হয়ে গেছে। কোরবানির বর্জ্য ফেলার পর এখানে থাকা আরও কঠিন হয়ে যায়।  ইদানিং সেখানে হাসপাতালের বর্জ্যও ফেলা হচ্ছে।

নাগরিক সংগঠন জন-উদ্যোগের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, শহরের প্রবেশমুখে গৃর্দানারায়ণপুরের আমনকুড়া বিলের ময়লার ভাগাড় এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ দূষিত করছে। ফিডার সড়কের পাশে এ ময়লার ভাগারটি নষ্ট করছে শহরের নান্দনিকতা। লোকজনকে নাকে-মুখে রুমাল চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। অবিলম্বেশহরের পরিবেশ উন্নয়নে এ ময়লার ভাগাড়টি শহরের বাইরে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। তিনি সুষ্ঠু ময়লা-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শেরপুরকে মডেল শহরে উন্নীত করার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনকে অনুরোধ অনুরোধ জানান।

এ ব্যাপারে শেরপুর পৌরসভা মেয়র গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন সাংবাদিকদের বলেন, ইউজিআইআইপি প্রকল্পের আওতায় শহরের অষ্টমীতলায় একটি ময়লা-বর্জ্য ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এজন্য জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রকল্পের পক্ষ থেকে ছয় কোটি টাকা জেলা  প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে মৃগী নদীর তীরে বাঁধ ও গাইড ওয়াল নির্মাণ করে ময়লার ডাম্পিং স্টেশন নির্মিত হলেই এখানে ময়লা ফেলা হবে না আর পৌরবাসীর  দুর্ভোগও থাকবে না। ।

Sherpur Times/ News Editor