রবিবার , ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

নজর কেড়েছে বাবর আলী জামে মসজিদ

প্রকাশিত হয়েছে -

শেরপুরের দৃষ্টিনন্দন মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন হিসেবে বাবর আলী জামে মসজিদটি সবার নজর কেড়েছে। জেলা সদরের নারায়ণপুর বাগবাড়ী এলাকায় মসজিদটির অবস্থান। প্রতিদিন স্থানীয়দের পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লী ও দর্শনার্থীরা ছুটে আসছেন নামাজ আদায় ও মসজিদটির নির্মাণশৈলী এক নজর দেখতে।

জানা যায়, শেরপুরের বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ্ব মো. ইদ্রিস মিয়া তার বাবা ‘বাবর আলী ’র নামে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সৌদি আরবের একটি মসজিদের অনুকরণে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির জমি ও নির্মাণকাজের সিংহভাগ অর্থের যোগান তিনিই দিয়েছেন। বাকী অর্থ যোগান দিচ্ছেন স্থানীয়রাসহ সাধারণ জনগণ। এই মসজিদে একসাথে দুই হাজার মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারবেন। পাশেই রয়েছে পর্দা সম্বলিত অন্তত ৩-৪শ মহিলার নামাজ পড়ার ব্যবস্থা। নকশা অনুযায়ী ৪০ শতক জমির উপর নির্মিত মূল সড়ক থেকে সিঁড়ি বেয়ে দুতলায় নির্মিত এই মসজিদটির ভিতরের কাজ অনেকটা শেষ হলেও বাইরের কাজ এখনও বাকী রয়েছে । গত ১২ এপ্রিল মসজিদটির উদ্যোক্তা শিল্পপতি ইদ্রিস মিয়া ইন্তেকাল করায় আপাতত নির্মাণ কাজের গতি কিছুটা কমে গেছে।

মসজিদের নির্মাণশৈলীতে দেখা যায়, নানা কারুকাজ, কাঠের আসবাবপত্র, দামি পাথর, আধুনিক টাইলস ও বর্ণিল আলোর ঝলকানিতে রাতে মসজিদটি হয়ে উঠে আরও সুন্দর। সেগুন কাঠ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দরজা ও দেয়ালজুড়ে খোদাই করা নকশায় বিশাল আলমারী। মসজিদজুড়ে লাগানো হয়েছে বর্ণিল বাতি। রং আর আলোতে মিলে রাতের মসজিদটিকে করে তুলে আরও আকর্ষণীয়। এশা ও ফজর নামাজের সময় নানা রঙের বাতিগুলো কিছুক্ষণ পরপর রং পরিবর্তন হয়ে বিশেষ এক আবহের সৃষ্টি করে। এই মসজিদের মোয়াজ্জিনের মায়াবী আজানের ধ্বনি ও ইমামের সূরা-ক্বেরাত এলাকার মুসলমানদের নামাজের প্রতি বিশেষ এক আগ্রহের সৃষ্টি করে বলে স্থানীয়রা জানান। মসজিদে আলো-বাতাস যাতে সহজে চলাচল করতে পারে সেজন্য চারপাশে রয়েছে খালি জায়গা। সেখানে তৈরি করা হচ্ছে দেশী-বিদেশী ফুল ও ফলের বাগান। মসজিদের ছাদেও বাগান তৈরির কাজ চলছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই মসজিদে মুসল্লিদের সুবিধার্থে রয়েছে গরম ও ঠান্ডা অযুর পানির ব্যবস্থা। মসজিদের সামনে বসানো হবে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা। মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ইদ্রিস মিয়ার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মসজিদের পাশেই তাকে দাফন করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে তিনি স্বজনদের বলে গেছেন, এই মসজিদটি যেন সর্বদা উজ্জীবিত রাখা হয়।

Advertisements

মসজিদটির অসমাপ্ত কাজ প্রসঙ্গে ইদ্রিস মিয়ার একমাত্র ছেলে গুলজার মো. ইয়াহহিয়া জিহান বলেন, একটি অত্যাধুনিক মসজিদ নির্মাণ করা নিয়ে বাবার দেয়া প্রতিশ্রুতি অবশ্যই তিনি রক্ষা করবেন। এজন্য মসজিদের পূর্ববর্তী সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এখানে টাকার কোন হিসাব করা হবে না।