শনিবার , ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

মোটিভেশন – ইমামুল হাসান তানভীর

প্রকাশিত হয়েছে -

মোটিভেশন
– ইমামুল হাসান তানভীর

এক গ্রামে দুই শিশু বাস করতো। এক জনের বয়স ছিল ৬ বছর এবং অন্য জনের বয়স ছিল ১০ বছর। তারা দুজনে সম্পর্কে একে অপরের ভাই। সারাদিন তারা খেলা করতো যেমনটা আপনিও ছোটবেলা খেলা করতেন। যাই হোক, একদিন তারা ঘুড়ি উড়াচ্ছিল ও খেলা করছিল। ১০ বছর বয়সের বাচ্চাটি ঘুড়ির সুতো ধরে দৌড়াচ্ছিল পেছন দিক হয়ে এবং ৬ বছরের বাচ্চাটা ঘুড়ির দিকে তাকিয়ে সেই ছেলেটির পিছে পিছে দৌড়াচ্ছিল। হঠাৎ করেই তারা গ্রাম ছেড়ে এক জঙ্গলে প্রবেশ করলো এবং ১০ বছরের বাচ্চাটি পেছন দিক হয়ে দৌড়াচ্ছিল বলে দুর্ঘটনা বশত একটি পুরানো কুয়ায় পরে যায়। ভয়ংকর অবস্থা। উপরে ৬ বছরের বাচ্চাটি তখন ভেবে পারছিল না যে কি করবে সে? কুয়ায় পড়া বাচ্চাটি খুব চিৎকার করছিল ভয়ে। ৬ বছরের বাচ্চাটি চারিদিকে তাকিয়ে দেখলে কেউ আছে কিনা সাহায্য করার জন্য; কিন্তু সেখানে কেউই ছিল না তাদের সাহায্যের জন্য। এমন সময় কুয়ার পাশে ৬ বছরের বাচ্চাটা একটা লম্বা দড়ি দেখতে পায়। সে কিছু না ভেবে সঙ্গে সঙ্গে সেই দড়িটি নিয়ে কুয়ার ভেতরে ফেলে সেই ১০ বছরের বাচ্চাটিকে টেনে তুলে আনে। উপরে উঠে আসার পর তারা অনেক ভয় পায় যে গ্রামে এটা জানাজানি হলে তারা খুব বকা খাবে।কিন্তু গ্রামে গিয়ে এটা বলার পর কেউ ই বিশ্বাস করল না। সবাই বলতে থাকলো,”১০ বছরের এত বড় বাচ্চাকে কিভাবে ৬ বছরের বাচ্চাটি তুলতে পারবে?তাও আবার কুয়া থেকে?এটা কখনোই সম্ভব নয়”। কিন্তু গ্রামের প্রবীণ-বুজুর্গ এক লোক তাদের কথা বিশ্বাস করলো এবং তাদের নিয়ে খেলতে লাগলো। এতে গ্রামের সবাই আশ্চর্য হয়ে গিয়ে সেই প্রবীণ-বুজুর্গ লোকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,”৬ বছরের বাচ্চাটি এটা কিভাবে করলো?” তখন প্রবীন ব্যাক্তিটি বললো, “বাচ্চারা তো বলছেই যে তারা কিভাবে পেরেছে এটা। তাদেরটাই তো সত্য।”
তখন উপস্থিত সবাই বলল,” সেটা তো শুনেছি। কিন্তু এই অসম্ভবটা কিভাবে সম্ভব হলো?”

প্রবীণ-বুজুর্গ লোকটি হাসলেন এবং সবাইকে বলতে লাগলেন,” যখন এই ১০ বছরের বড় বাচ্চাটি নিচে পরে গিয়েছিল তখন সেখানে কেউ ছিল না সাহায্য করার জন্য।শুধু ছিল ৬ বছরের এই বাচ্চাটি। এই বাচ্চাটি তখন একটি জিনিসই চিন্তা করছিল যে পরে যাওয়া বাচ্চাটিকে তুলে আনতে হবে। তাই সেই দড়ি দিয়ে টেনে তাকে তুলে আনে। এখানেই সেই চমৎকার জিনিসটি রয়েছে অর্থাৎ তার এই অসম্ভবকে সম্ভব করার কারণটা রয়েছে। যখন সে সাহায্যের জন্য কাউকে না দেখে নিজেই কাজে ঝেপে পরল তখন কেউ ছিল না এটা বলার জন্য যে ‘এই তুমি এটা পারবে না, এটা অসম্ভব’। সেখানে সে নিজেও ছিল না যে নিজেকে বলবে যে এটা আমি পারবো না। এতে করে তার ভিতরে কাজ করেছে শুধুই আত্মবিশ্বাস এবং এক লক্ষ্য ও দৃঢ় মনোবল। আর এর ফলাফলই হলো বড় বাচ্চাটি এখন আমাদের সামনে। ”
লোকেরা সব বুঝতে পারে এবং বাচ্চাটির অনেক প্রশংসা করে। এরপর থেকে তারা সব সময় ভালো ফলাফল অর্জন করে জীবনে।

Advertisements

গল্পটি শোনা। কিন্তু এটি একটি শিক্ষণীয় গল্প। কেননা আমরা আমাদের জীবনে অনেক কাজ করতে গিয়ে আমরা এই কথা গুলোর সম্মুখীন হই যে,’ তুমি এটা পারবে না, এটা সম্ভব নয়। ‘ কিন্তু আমাদের জীবন এটা না, আমাদের এই কথাগুলোকে এক পাশে ফেলে এগিয়ে যেতে হবে ‘আমিই পারবো’ বলে এবং এই গল্পের শিক্ষাই আমাদের জীবনে সফলতা আনতে অনেক ভূমিকা রাখবে। আর আজকের তরুণ সমাজ যদি এই মানসিকতায় এগিয়ে চলে তো বাংলাদেশের নতুন সূর্য উদয় হতে আর দেরি নেই। কেননা আগামীর বিশ্ব বাংলাদেশের।

ইমামুল হাসান তানভীর,
শিক্ষার্থী, একাদশ শ্রেণি।

 

(শেরপুর টাইমস ডট কমের ‍“সাহিত্য পাতা” সকলের জন্য উন্মুক্ত। আপনার স্বরচিত ছড়া- কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য ইমেল করুন sherpurtimesdesk@gmail.com এই ঠিকানায়।)