রবিবার , ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ - গ্রীষ্মকাল || ৩রা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

ঝিনাইগাতীতে পার্চিং পদ্ধতির সুফল পাচ্ছেন কৃষকেরা

প্রকাশিত হয়েছে -

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ধান খেতে পোকার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে পার্চিং পদ্ধতির সুফল পাচ্ছে কৃষকেরা। ফলে ধান খেতে ‘ডাল পোঁতা বা পার্চি’ এর ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পার্চিং ব্যবহারে কমছে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার, অন্যদিকে রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। ধানের খেতে পোকা দমনের পাশাপাশি মাটির নাইট্রোজেনের ঘাটতিও পূরণ হচ্ছে। এতে ফসলে কীটনাশক স্প্রের বাড়তি খরচ যেমন হচ্ছে না, তেমন বাড়ছে ফসলের উৎপাদনও।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানখেতে পাচির্ং পদ্ধতির ব্যবহার দেখা গেছে। ধান খেতের মাঝে ১৫ থেকে ২০ হাত দূরে দূরে গাছের ডাল বা বাঁশের কঞ্চি পোঁতা। পুঁতে দেওয়া গাছের ডাল ও বাঁশের কঞ্চিতে শালিক, ফিঙে, বক, বুলবুলিসহ নানা জাতের এসে বসছে। একটু পরপর ডাল থেকে জমির খেতের মধ্যে ঢুকে যাচ্ছিল পাখিগুলো। আর জমির খেতের মধ্যে থাকা পোকাগুলো ধরে ধরে খেয়ে নিচ্ছে। যে জমিতে পোকা বেশি সেই জমিতে পাখির আনাগোনাও বেশি। আর সেখানে কিছক্ষণ পরপরই উড়ে এসে বসে পাখি। এতে ফসল রক্ষা পাচ্ছে পোকা-মাকড়ের হাত থেকে। এভাবে কীটনাশক ছাড়া সহজেই দমন হচ্ছে পোকা। দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে পরিবেশ।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পোকা দমনের পরিবেশবান্ধব এই পদ্ধতির নাম পার্চিং। পাখি বসে এমন উঁচু ডাল বা খুঁটির নাম পার্চ। আর পার্চ থেকেই পার্চিং নামের উদ্ভব। এবার মৌসুমে এ উপজেলার ১৪ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। এর প্রায় ৮০ ভাগের বেশি কৃষিজমিতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে।

Advertisements

উপজেলার বৈলতেল গ্রামের কৃষক মো. তারা মিয়া (৪৮) বলেন, ‘আমি এক একর জমিতে বোর ধান চাষ করেছি। আগে পোকামাকড় দমনে প্রচুর কীটনাশক খরচ হতো। এবার কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তাদের (ব্লক সুপারভাইজার) পরামর্শে এখন পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছি। এতে নামমাত্র কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়েছে বোরো খেতে। ফলে খরচ অনেকটা কমে গেছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, জমিতে ধানের চারা রোপণের পর মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো পোকা, চুঙ্গি পোকা, শিষ কাটা লেদা পোকাসহ নানান পোকা আক্রমণ করে। এসব পোকা আবার পাখিদের প্রিয় খাবার। পার্চিং –পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে পাখিরা পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। এবার মৌসুমে এ উপজেলার প্রতিটি ব্লকে আনুষ্ঠানিকতা ভাবে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহারের উদ্বোধন করেছি। গত বছর গুলোর চেয়ে এবার কৃষকেরা ব্যাপক ভাবে এ পদ্ধতিটা ব্যবহার করেছে। পাশাপাশি কৃষকেরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করায় পাখির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।