যৌতুকের মামলায় জামিন পেতে স্ত্রীকে ভুয়া তালাকনামা পাঠানোর মামলায় সাময়িক বরখাস্ত সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল উদ্দিন প্রিন্সকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান এ আদেশ দেন।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চসূত্রে জানা যায়, গত বুধবার আদালতে এ মামলায় সোহেল আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সোহেলের স্ত্রী রিফাত জাহান বাদী হয়ে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় তার স্বামী সোহেলসহ বিবাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী জামাল উদ্দিনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয়। আস্তে আস্তে দুজনের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। এরপর ২০২২ সালের ৩০ এপ্রিল তাদের বিয়ে হয়। কিছুদিন পর বাদী জানতে পারেন বিয়ের আগে আমিনা কিবরিয়া মিশু নামের একজনকে সোহেল বিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সোহেল জানান, তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে। মোহরানার কিছু টাকা বাকি আছে। দিয়ে দিলে ঝামেলা মিটে যাবে। বাদী পারিবারিক সম্মানের ও সংসার করার কথা চিন্তা করে ওই বিষয়ে কাউকে কিছু জানাননি।
কয়েকদিন পর সোহেল তার স্ত্রী রিফাত জাহানের কাছে একটি ডায়মন্ড রিং ও প্রাইভেটকার কেনার জন্য ২৫ লাখ টাকা দাবি করেন। তা না হলে বাদীকে ঘরে তুলবেন না বলে জানান। তখন তার স্ত্রীর মামা আসামি সোহেলকে ডায়মন্ড মিশ্রিত সোনার রিং এবং তিন লাখ টাকা দেন। কিন্তু এতেও সোহেলের দাবি পূরণ না হওয়ায় নির্যাতন করতে থাকেন। পরে বাধ্য হয়ে ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট যৌতুক নিরোধ আইনে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা দায়ের করেন।
পরে এ মামলায় জামিন নিতে সোহেল আদালতে জানান, ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট স্ত্রী রিফাতকে তালাকের নোটিশ ও তালাকনামা পাঠানো হয়েছে। এর ফটোকপি কাগজ দেখিয়ে আদালত থেকে জামিন নেন সোহেল। পরে খবর নিয়ে জানা যায়, আদালতে দাখিল করা তালাকানামার কাগজ ভুয়া। অপর আসামি বিবাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী জামাল উদ্দিনের সহায়তায় জাল ডাক রশিদের মাধ্যমে সৃষ্টি করা তালাকনামা দেখানো হয়েছে।
এ ঘটনায় সোহেলের স্ত্রী ফের আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ মামলা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আলাউদ্দিন আদালতে দুজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/২০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।