শেরপুরের শ্রীবরদীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ভেঙ্গে উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের পায়তারার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কুড়িকাহনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরানো পাকা ভবনের একটি কক্ষ ভেঙ্গে ফেলেছে ওই বিদ্যালয় সংলগ্ন কুড়িকাহনিয়া সাউথ কুরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতেকরে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অসুবিধা হচ্ছে। এনিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মাঝে গুঞ্জনের ঝড় উঠেছে।
এলাকাবাসি ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, কুড়িকাহনিয়া গ্রামের ইয়ার মামুদ মন্ডল ১৯৩৮ সালে কুড়িকাহনিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষে বিদ্যালয়ের নামে ৫৩ শতাংশ জমি দান করেন। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের মধ্য দিয়ে এ পর্যন্ত পাঠদান করিয়া আসিতেছে। গত ৩ আগস্ট কুড়িকাহনিয়া সাউথ কুরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কুড়িকাহনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ ভেঙ্গে ফেলেছে। এতেকরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। কুড়িকাহনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মর্জিনা খাতুন জানান, এখানে উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে ২ শতাংশ জমি রয়েছে এবং এখানে ৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। তিনি আরো জানান, রেজুলেশন করে এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.ডি.এম শহিদুল ইসলামের উপস্থিতিতে একটি কক্ষ ভাঙ্গা হয়েছে। পাঠদানের অসুবিধার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি শ্রেণি কক্ষ ভেঙ্গে ফেলাতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করানো অসুবিধা হচ্ছে। তাছাড়া, কর্তৃপক্ষ বলেছেন এখানে ভবণ নির্মাণ হলে আমাদের একটি কক্ষ ব্যবহার করতে দেওয়া হবে।
অপরদিকে কুড়িকাহনিয়া সাউথ কুরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুড়িকাহনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে ১৯৬৮ সালে ৫৩ শতাংশ আলাদা জায়গার উপর কুড়িকাহনিয়া সাউথ কুরুয়া উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ৩৬ শতাংশ জমির উপর বর্তমান ভবন এবং ১৬ শতাংশ জমি বাজারসহ ওই বিদ্যালয়ে রয়েছে। এনিয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নুল আবেদীন জানান, কুড়িকাহনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই আমাদের ১৬ শতাংশ জমি রয়েছে এবং জমি মেপে দেখা গেছে ২ শতাংশ জমি ওই বিদ্যালয়ের ভবনের মধ্যে রয়েছে। আমরা নতুন ভবন নির্মাণ করার বরাদ্দ পেয়েছি, তাই আমরা সকলের সম্মতিক্রমে ও উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে একটি কক্ষ ভেঙ্গে ফেলেছি। এতেকরে আমাদের সামান্য ভুল হয়েছে। এব্যাপারে কথা বলা জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাজমুশ শিহারের অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় নাই। এছাড়া মোবাইল ফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নাই।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ.ডি.এম শহিদুল ইসলাম জানান, উচ্চ বিদ্যালয়ের জায়গার উপর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবনের কিছু অংশ পড়েছিল। কুড়িকাহনিয়া সাউথ কুরুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবণের বরাদ্দ হওয়ায় ওই বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ ভেঙ্গ ফেলা হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসি জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি আমাকে অবগত করেছে। এছাড়া স্থানীয় এমপি মহোদয় এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতেছেন।