শেরপুরের শ্রীবরদীর প্রতিটি এলাকা, খেলার মাঠ, হাট বাজারসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিপিএল ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাজির নামে চলছে জুয়ার জমজমাট আসর। দূর্বল টিমের সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের খেলা থাকলে সে ক্ষেত্রে দেয়া হচ্ছে লোভনীয় অফার। বিপিএল ঘিরে চলছে বাজিকরদের রমরমা বাজি। এক ম্যাচের পাওয়ার প্লেতে কত রান হবে! ৫-১০ ওভারে কত রান হবে! খেলায় কে কতটি উইকেট পাবে! কে কত রান করবে ইত্যাদি বাজিতে মেতে উঠে ক্রিকেট জুয়াড়ীরা।
জানা যায়, চলমান বিপিএলকে ঘিরে চলছে ধুম-ধামাক্কা জুয়ার আসর। টেলিভিশনের সামনে বসে খেলা দেখা দর্শকদের মাঝে চলে দর কষাকষি। ১৫-২৮ বছর বয়সীরাই ক্রিকেট জুয়ায় মেতে উঠছে বেশী। জুয়াড়ীদের এই নতুন ধান্ধায় মেতে উঠেছে শ্রীবরদী উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও। ধনীর দুলালরা বাজি ধরেন মোবাইলের মাধ্যমে ক্ষুদে ম্যাসেজ বার্তা দিয়ে। তাদের বাজি ধরার ধরন ভিন্ন এবং বড় বাজেট। মোবাইল ফোনের বড় বাজির ধরার কথাগুলো রেকর্ড করে রাখে।
বিভিন্ন মোড়ের দোকানগুলোতে প্রকাশ্যে চলে এই ক্রিকেট বাজি। দলগত হার-জিত নির্ধারণ বাজির পাশাপাশি চলে ওভার বা বল বাই বল বাজি। এছাড়াও খেলা শুরুর পূর্বে বিভিন্ন পয়েন্টে বসে বাজিকরদের হাট। এ দেখে নতুন প্রজন্মের অনেকেই বাজি ধরে সর্বস্ব হারিয়ে মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ছে।
অন্যদিকে উপজেলার বিভিন্ন বড় বড় দোকান মালিকরা বাজিকরদের মাধ্যম হিসেবে টাকা জমা, আদান প্রদানসহ বাজি ধরার জুয়াড়ী ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। আজকাল একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, যখন কোন খেলা চলে বিশেষ করে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট ম্যাচ হলে জটলা বেধে যায় আশপাশের বিভিন্ন গলিতে।
৮ ডিসেম্বর শুক্রবার দুপুরে কথা হয় এক জুয়াড়ীর সাথে। তিনি এ প্রতিনিধিকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, প্রতিটি খেলায় আমার মাধ্যমে নূন্যতম ৩লক্ষ টাকার বাজি ধরা হয়। প্রতিদিন আমার আয় ৩হাজার থেকে ৬হাজার টাকা। আর এ টাকায় আমার সাথে আরো ৫জন কাজ করছে। তাদের কাজ হচ্ছে নতুন প্রজন্মের ছেলেদের উৎসাহিত করা।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল হক বলেন, বিষয়টি এর আগেও শুনেছি। পুলিশের পক্ষে গোয়েন্দা নজরদারীসহ বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।
সচেতন মহলের দাবী, সমাজের সকল অপকর্ম থেকে রেহাই পেতে অভিভাবকদের দৃঢ় সচেতনতার পাশাপাশি সামাজিক প্রশাসনিক বিশেষ নজরদারি খুবই জরুরী। প্রশাসন ক্রিকেট বাজিকরদের দমন করলে হয়ত কিছুটা বাজি বন্ধ করা সম্ভব হবে।