শোকের সাথে বসবাস
– মো: রাবিউল ইসলাম
হে বঙ্গ দেশমাতৃকা ,
আমি তোমার কোন খুনির কথা লিখবো?
যখন মুখের ভাষা কেঁড়ে নেবার জন্য
তোমার নিরীহ সন্তানের বুকে
নির্দয় ভাবে গুলি চালিয়েছিল
ওই নিষ্ঠুর হায়েনার দল।
সেই বায়ান্নতেই ভাইকে হারিয়ে
ওই খুনিদের চিনেছি আমরা।
ওরা আসলে নরপিশাচ খুনি
ছিলো তাদের হিংস্র পশুর বল।
কিন্তু তোমার সন্তানেরা কেউ পিছু হটেনি।
সেদিনের রক্তের বিনিময়ে
মুখের ভাষাকে করেছিল রক্ষা।
যদিও ছিলো ওরা , রক্ত পিপাসু বুভুক্ষা।
সেদিন হেরে গিয়ে জ্বালিয়ে রেখেছিল মনে
হিংসার আগুন। বাঙালির মনে তাই ওরা
আসতে দেয়নি কভু
আনন্দের অমলিন ফাগুন।
করেছে শাসন -শোষণ। আর সবশেষে
৭১ এর ২৫ মার্চে বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণে
শুরু করলো মানুষ খুনের অশুভ উদ্বোধন ।
চালালো নয়টি মাস সীমাহীন নির্মম নির্যাতন ।
তাজা রক্তে মিটিয়ে তিয়াস পালালো শেষে।
কিন্তু মিটেনি ক্ষোভ । তাই করেছিল
বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে
নিধনের লোভ।
বাঙালিকে করতে চাইলো
মেধাহীন আর শক্তিহীন অথর্ব বংশ।
তাইতো নিজের লোকের সাথে
আতাত করে ওরা তোমার স্বাধীন বুকে
শ্রেষ্ঠ সন্তানকে করলো সপরিবারে ধ্বংস !
অপশক্তি নিলো হাতে তুলে চরম ক্ষমতা।
তুমিতো সব জানো
হে মোর প্রিয় দেশমাতৃকা !
তবে ওরাও হয়েছে বদল বারবার
রাখতে পারেনি ধরে সাধের ক্ষমতার মমতা।
বাঙালির রক্তের নেশা
বারবার উস্কানি দেয় বলেই
পাশের ঘরে চলে ব্রাশ ফায়ার
আর ঘুমন্ত সঙ্গী তার জানেনা কিছুই !
হায়রে অভাগী দেশমাতৃকা ,
তোমার সন্তানেরা চলে তবুও
ক্ষমতা নামের আলেয়ার পিছুই।
তুমি জানলে এবার । তাই হলো সবে ঐক্যবদ্ধ
হঠাতে স্বৈরাচার। কিন্ত সেই ক্ষমতাধরের হাতে
এবার খুন হল গণতন্ত্র পাগল উদ্দীপ্ত যুবক।
খুন,খুন আর খুন। বাঙালির হাত এখন খুনে পারদর্শী।
তাই ওরা দুরভিসন্ধি সফল করতে ২১ আগস্টে
গ্রেনেড ফাটিয়ে নিলো ২৪ টি তাজা প্রাণ !
ভাসিয়ে দিল শহর, যেনো লাল রক্তের বান। আহ !
কী ভয়ংকর সেই দৃশ্য !
জানলো গোটা বিশ্ব।
হলো সৃষ্টি চির শোকের এক মাস
নাম তার আগস্ট।
তাই এই আগস্টে প্রকৃতিও যেনো
অশ্রু নিবারণ করতে না পেরে আজ শোকার্ত।
হে দেশমাতৃকা, তোমার প্রিয় বাঙালি সন্তানেরা
মনুষ্যত্বকে নিজ করে বধ করে বলেই
করতে হয় শোকের সাথে বসবাস।
মো: রাবিউল ইসলাম
সহকারী শিক্ষক(বাংলা)
আইডিয়াল প্রিপারেটরি এন্ড হাই স্কুল,শেরপুর।
(শেরপুর টাইমস ডট কমের “সাহিত্য পাতা” সকলের জন্য উন্মুক্ত। আপনার স্বরচিত ছড়া- কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য ইমেল করুন sherpurtimesdesk@gmail.com এই ঠিকানায়।)