শেরপুরে সম্প্রীতি রক্ষায় ইসকন এবং হিন্দু নেতৃবৃন্দের সাথে জেলা বিএনপির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হযরত আলীর বাসভবনে ওই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি মাহমুদুল হক রুবেল বলেন, আমি আমার নির্বাচনী এলাকা ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা ছাড়াও জেলা সর্বত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের উপর যাতে কোন নির্যাতন ও লুটপাট না হয় সে বিষয়ে কড়া নজর রেখেছি। উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে তিনি বলেন, শুনেছি আপনাদের অনেক দাবি-দাওয়া রয়েছে। এসব দাবি দেওয়া নিয়ে আমরাও আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে সরকারের কাছে পেশ করতে চাই। তবে বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি আরও একটু স্বাভাবিক হলে আমরা আপনাদের বিষয় নিয়ে মাঠে নামবো এবং বর্তমান সরকারের কাছে জোর দাবি জানাবো। সেই সাথে দাবি আদায়ের জোর প্রচেষ্টাও করবো। আপনারা আপনাদের মন্দিরে নিশ্চিন্তে পূজা অর্চনা এবং নির্বিঘ্নে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করবেন। সেই সাথে নিশ্চিন্তে ঘুমাবেন। বিএনপি আপনাদের পাশে আছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং আপামর জনসাধারণের অংশগ্রহণে আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। শেরপুরে বিচ্ছিন্ন দু’একটি ঘটনা ছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের বাসা-বাড়ি এবং মন্দিরে কোনরকম আক্রমণ করতে পারেনি দুষ্কৃতকারীরা। আর এটা সম্ভব হয়েছে বিএনপির তৎপরতার কারণে। সরকার পতনের পর থেকেই জেলা বিএনপি এবং বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে মাঠে ছিলেন। তারপরও ফাঁকফোকরে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, যা দুষ্কৃতকারী এবং পরাজিত স্বৈরশাসকের লোকজনই করিয়েছে। বিএনপি সম্প্রীতির রাজনীতি বিশ্বাস করে। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। তিনি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, তারেক রহমান আমাকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন- বিএনপি বা তার কোন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দ্বারা কোন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্যাতিত হলে তার রক্ষা নেই। তাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে। এছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর কোনরকম নির্যাতন-নিপীড়ন যাতে না হয় সে বিষয়ে কড়া নজর রাখার জন্য তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন।
উপস্থিত হিন্দুর সম্প্রদায় নেতৃবৃন্দদের মধ্যে ইসকনের সেক্রেটারি অপূর্ব দাস বলেন, শেরপুরে আমরা মোটামুটি ভালো রয়েছি। কিছুটা আতঙ্ক থাকলেও আক্রমণের শিকার হইনি। তবে আপনারা পাশে থাকলে আমরা আরও সাহস পাবো।
মতবিনিময়কালে বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যে মো. হাতেম আলী, আব্দুল আউয়াল চৌধুরী, ফজলুর রহমান তারা, এস এম শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম মাসুদ, আবু রায়হান রূপনসহ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শান্ত রায়, সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনাথ বর্মন, শহর শাখার সভাপতি পিপুল সরকার, সাধারণ সম্পাদক সোহাগ দেসহ বিভিন্ন স্তরের হিন্দু নেতৃবৃন্দ ও সুধীমহল উপস্থিত ছিলেন।