শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল থেকে আন্দোলনে নিহত তিনজনের মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। রবিবার সন্ধ্যার দিকে মরদেহ তিনটি নিয়ে শহরের দিকে এ মিছিল করে আন্দোলনকারীরা। এসময় তারা নানান স্লোগান দিতে থাকে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, শেরপুরে ৫ জন মারা গেছে। আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে অর্ধশত মানুষ। জেলা শহরে একাধিক স্থানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এদিন পৌর শহরের তিনআনী বাজার এলাকায় আন্দোলনকারীদের ওপর প্রশাসনের টহল গাড়ি ওঠিয়ে দিলে বেশ কয়েক জন আহত হয়। গুলিতেও আহত হয় অন্তত ২০ জন।
আহতদের শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনজনের মৃত্যু নিশ্চিত করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। নিহতরা হলেন আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষের ছাত্র মহল্লার বাসিন্দা তুষার (২৪), জেলা সদরের পাকুড়িয়া চৈতনখিলার মাহবুব (৩০), লংগরপাড়া গ্রামের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সবুজ (২০)। এর বাইরে ডা: সেকান্দর আলী কলেজের স্নাতক ১ম বর্ষের ছাত্র ঝিনাইগাতীর জরাকুড়ার সোহরাবের ছেলে সৌরভ (২১) ও মীম নামে আরও দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, জেলা শহরের নিউমার্কেট ও থানার মোড় বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিলে আন্দোলনকারীরা সেখানে এলে সংঘর্ষ শুরু হয়। অপরদিকে শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর মোড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিলে সেখানে আন্দোলনকারীরা তাদেরকে ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয়।
হামলা ও ভাঙচুর করা হয় পুলিশ সুপারের বাসভবন, সিভিল সার্জনের বাসভবন, পুলিশ সুপার শপিং সেন্টার, শেরপুর সদর থানা ও খোয়ারপাড় পুলিশ বক্সে, আনসার বাহিনী অফিস, আলিশান রেস্টুরেন্ট সহ আরও কিছু স্থাপনায়।
হতাহতের পর থেকেই আন্দোলনকারীরা চারদিক থেকে শহরে চলে আসায় পুরো শহর তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। বন্ধ হয়ে যায় শহরে স্বাভাবিক যান চলাচল ও দোকানপাট।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জনসাধারণ নিরাপত্তাহীনতায় এবং চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।