শেরপুরে চাকরিতে পূণর্বহাল এবং বিগত দিনের বকেয়া বেতনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে রমজান আলী নামে জেলা পরিষদের ভুক্তভোগী এক নিরাপত্তা প্রহরী। বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে শহরের নির্ঝর কমিউনিটি সেন্টারের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রমজান আলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৪ সালের ২৬ এপ্রিল আমাকে শেরপুর জেলা পরিষদ এর নালিতাবাড়ী উপজেলার ডাকবাংলাতে নিরাপত্তা প্রহরী পদে (অস্থায়ী) চাকুরি নিয়োগ দেন। স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল বিগত ২০১৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আমাকে একটি মিথ্যে ও হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে ২২ দিন জেল হাজতে পাঠানো হয়। ওই ২২ দিন আমার স্ত্রী সকল কাজকর্ম বা ডাকবাংলার রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চালিয়ে যান। আমি জেল থেকে ফিরে এসে পুনরায় কাজে যোগদান করলেও আমার বেতন ভাতাদী বকেয়া রাখা হয়। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ.জেড.এম মোর্শেদ তার বেতন ভাতিদি প্রদানের বিষয়ে কয়েকদিন সময় নেন। এরপর তিনি বদলি হয়ে চলে গেলে বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আমাকে কোনোরকম কারণ দর্শাও নোটিশ না দিয়েই হয়রানি মূলকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেন। এরপর আমি হাইকোর্টে রিট পিটেশন করলে আদালত আমার বকেয়া বেতন ভাতা প্রদান এবং চাকুরী স্থায়ীকরণের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হলে বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী আমাকে পুনরায় চাকুরীতে পুনর্বহাল করে অন্যত্র বদলি করেন। কিন্তু আমার কোনো বকেয়া বেতন ভাতা প্রদান করা হচ্ছে না ।
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু ওই টাকা আমি দিতে না পারায় আমাকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। সেই সাথে আমাকে কাগজে-কলমে যোগদান দেখালেও বাস্তবে কাজে যোগদান করতে দেওয়া হচ্ছে না। একই সাথে আমার বকেয়া বেতন ভাতাও দেওয়া হচ্ছে না ।
সংবাদ সম্মেলনে রমজান আলীর সাথে তার স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান উপস্থিত ছিলেন। তার কন্যা সন্তানও দাবি করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী তার বাবাকে তার সামনে নানাভাবে অপমান করে কাজে যোগদান না করিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন। তারা তার বাবার চাকুরি স্থায়ীকরণ ও বকেয়া বেতন ভাতা প্রদানের দাবি জানান ।
এ বিষয়ে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জবুন নাহার শাম্মী জানান, আমাদের জেলা পরিষদের নালিতাবাড়ী উপজেলার ডাক বাংলোর যে স্টাফ রয়েছে সেই রমজান আলী যে অভিযোগগুলো করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ তার নিয়োগটা হয়েছিল সম্পূর্ণ অস্থায়ী এবং “নো ওয়ার্ক নো পে” এর ভিত্তিতে। এছাড়া তার বেশ কিছু স্পেসিফিক অভিযোগ থাকার কারণে বা কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে বরখাস্ত করা হয়। এরপর হাইকোর্টের একটি রায়ের কারণে তাকে পুনরায় যোগদান করানো হয়। কিন্তু এরপরও তিনি আড়াই মাস অনুপস্থিত থাকার কারণটি আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় প্রেরণ করেছি সেখানে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে সে হিসেবে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।