শেরপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কৃষক সাদেক হত্যার ২ মাস পেরিয়ে গেলেও কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়া এবং এ হত্যার প্রতিবাদে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। সেই সাথে আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে বাদীকে প্রাণ নাশ ও মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করেছেন খুন হওয়া সাদেকের পুত্র ও এ হত্যা মামলার বাদী আল আমীন।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নের চর দুবলাই গ্রামের প্রধান সড়কে এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন পালন করেন। এসময় গ্রামবাসী ও নিহতের স্বজনরা আসামীদের ফাঁসির দাবী তুলের এবং আসামীদের অব্যহত হুমকির প্রতিবাদ করেন। সেই সাথে তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, সদর উপজেলার ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চর দুবলাই গ্রামের মৃত রহিম রহিম উদ্দিনের দুই পুত্র সাদেক আলী (৬২) ও চাঁন মিয়ার (৫২) সাথে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে গত ২৭ আগষ্ট সকালে বিরোধপূর্ণ জমিতে কৃষক সাদেক আলী জমি চাষ দিতে যায়। এসময় চাঁন মিয়া, তার স্ত্রী সবুজা বেগম (৪৫) এবং তার দুই পুত্র যথাক্রমে সুমন মিয়া (৩০) ও সোলাইমান (২৫)সহ একই গ্রামের আফজাল ও প্রাশ্ববর্তী পশ্চিম পাড়ার উজ্জল এসে সাদেক আলির উপর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। পরে তারা সাদেক আলীকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।
এদিকে, এ খবর পেয়ে সাদেক আলীর অন্যান্য আত্মীয়রা এসে তাকে প্রথমে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু দুই দিন পর ২৯ আগষ্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদেক আলীর অবস্থা খারাপ হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে ওই দিন রাতেই সে মারা যায়। পরে এ ঘটনায় উল্লেখিতদের বিরুদ্ধে সাদেক আলীর এক মাত্র পুত্র আল আমীন বাদী হয়ে ১ সেপ্টেম্বর শেরপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলা দায়ের পর থেকে আসামী সবাই পালাতক থেকে সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসে। এরপর থেকে আসামীরা প্রকাশ্যে বাদী এবং তার বোন ও বোন জামাইসহ অন্যান্য আত্মিয়স্বজনকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে বলে মানববন্ধনে অভিযোগ করেন তারা। ইতিমধ্যে আসামীরা তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যে মামলা দিয়েও হয়রানী করেছে এবং তারা এখন আতংকে দিন কাটাচ্ছেন বলেও দাবী তাদের।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমদ বাদল জানান, বাদী-আসামীরা পরস্পর ভাই-ভাতিজা। আসামীরা বাদী পক্ষকে হুমকি দিচ্ছে এ বিষয়ে তারা থানায় জানায়নি এবং থানায় কোন জিডিও করেনি। এছাড়া মানববন্ধনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে ৩ সপ্তাহের জামিনে রয়েছে। সময় শেষে নিম্ন আদালতে হাজির হলে আটকা পড়ে যেতে পারে।