শেরপুর জেলায় অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আজো গড়ে ওঠেনি শহীদ মিনার। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানাতে পারে না। অনেক প্রতিষ্ঠানে শুধু জাতীয় পতাকা তুলেই দায়িত্ব পালন করেন শিক্ষকরা ।
অন্যদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মর্কতার কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য মতে, জেলায় সরকারী প্রাক প্রাথমিক ও সরকারী প্রাথমিক স্কুল রয়েছে ৭২৮ টি , মাধ্যমিক ১৮১টি, মাদ্রাসা ১০৪টি, কারিগরি ১৬ টি ও কলেজ ২৯ টি মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০৫৮টি থাকলেও কি পরিমান প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে তার তথ্য নেই জেলা শিক্ষা অফিসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার চেঙ্গুরিয়া আনছার আলী উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তার পাশের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে ছাত্রের সংখ্যা প্রায় পনেরশ অথচ এখানে কাঠের টুকরো দিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রতিকি শহীদ মিনার। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কোন শহীদ মিনার না থাকায় প্রতি বছর ভাষা শহীদদের স্মরণে এ শহীদ মিনারেই ফুলেল শ্রদ্ধা জানান শিক্ষার্থীরা। আবার কোন কোন বছর ১২ কিলোমিটার রাস্তা হেটে ঝিনাইগাতী সদরে অবস্থিত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা । ভোগান্তির যেন শেষ নেই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের।
ঠিক এমনই জেলার নকলা, নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী সহ পাঁচটি উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনার নেই। ফলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অমর একুশে, ভাষা আন্দোলন কিংবা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুল দিয়ে শহীদদের সম্মান জানাতে পারছেনা সহসায়।
সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষের কাছে শিক্ষার্থীরা দাবী করছে অতিদ্রুত ভাষা শহীদদের স্বরণে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের ।
চেঙ্গুরিয়া আনছার আলী উচ্চ বিদ্যাললের নবম শ্রেনীর শির্ক্ষাথী রিয়া বলেন, আমরা ভাষা অন্দোলন দেখিনি তবে বইয়ে পড়েছি তাদের আতœত্যাগের কথা । অথচ ভাষা দিবসে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেও পারছিনা শহীদ মিনার না থাকায়।
অন্য আরেক শিক্ষার্থী ঝরনা বলেন, সরকার হাজার হাজার টাকা খরচ করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে অথচ গুরুত্বপূর্ন এ বিষয়টির প্রতি নজর দিচ্ছেনা । আমি সরকারের কাছে দাবী করছি দ্রুত যে সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তাতে তা স্থাপন করার।
বই পড়ে শহীদ মিনার সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা জানতে পারলেও এ ব্যাপকতা বুঝতে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন জরুরি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: ফজলুল হক জানালেন , প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার হোক এটি আমরাও চাই তবে কি প্রক্রিয়ায় শহীদ মিনার স্থাপন করা হবে এমন কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি। সরকারী নির্দেশনা পেলে আমরা অবশ্যয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ উদ্দীন এ প্রতিবেদককে জানালেন, শহীদ মিনার স্থাপনে সরকারি কোন অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না । সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সম্পৃক্ত করে শহীদ মিনার স্থাপনে উদ্যোগ নিতে হবে। জেলায় কি পরিমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার আছে জানতে চাইলে তিনি জানান, সেই তথ্য জেলা শিক্ষা অফিসের কাছে নেই।