রাত পোহালেই কোরবানির ঈদ। কোরবানির পশু কেনা হলেও অনেকেই এখনো ঠিক করতে পারেননি কসাই। ফলে দুশ্চিতায় রয়েছেন তারা।
শেরপুর জেলা শহরসহ উপজেলা শহরগুলোর অনেকেই কসাইয়ের অভাবে পড়েছেন বিপাকে। শহরের খরমপুর এলাকার সাইফুর রহমান। কোরবানি দেওয়ার জন্য দুটি গরু কিনেছেন। এখন কসাই না পাওয়ায় রীতিমতো দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘ঈদের সময় কসাইদের কদর বাড়ে । পারিশ্রমিকের চেয়ে বেশি টাকা দিলেও তাদের পাওয়া বড় দায়। সকাল হলেই কোরবানি। অথচ এখনো কসাই পেলাম না। কী করব বুঝতে পারছি না।’
ঝিনাইগাতী উপজেলার আলহাজ্ব আবুল হাশেম বলেন, প্রতি হাজারে ১শ টাকা হিসেবে টাকা দিয়েও কসাইয়ের সিডিউল পাওয়া যাচ্ছে না। ১ লাখ টাকার গরুর চার্জ করা হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। আমাদের মফস্বলেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে রাজধানীতে কি হবে?
শ্রীবরদীর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ মানেই আনন্দ। প্রতিবছরের মতো এবারো কোরবানির জন্য দুদিন আগেই পশু কিনেছি। এখনো পর্যন্ত সবকিছুই হাসি-আনন্দের মধ্যে যাচ্ছে। কিন্তু কসাই ঠিক হয়নি বলে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। স্থানীয় কসাই রাজু ও আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও সিডিউল যাওয়া যায়নি।
নালিতাবাড়ি উপজেলার জাকির হোসেন জানান, প্রতিবারের মতো এবারো তিনি গরু কেনার বাজেটের সঙ্গে কসাইয়ের বাজেট আলাদা করে রেখেছেন। স্থানীয় এক কসাইয়ের সঙ্গে কথা বলে সিডিউলও নিয়ে রেখেছেন। সেজন্য তিনি অনেকটাই টেনশন ফ্রি আছেন বলে জানালেন।
পেশাদার কসাইদের সংকটে মৌসুমী কসাইদের কদরও বেড়েছে। তবে তারা ঠিকভাবে পশুর চামড়া ছাড়াতে জানেন না। ফলে এসব চামড়া রফতানির মান হারায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কথা হয় কসাই হাকিম মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবার ঈদে ব্যস্ত, মহাব্যস্ত। ঈদের টানা তিন দিনই আমাকে বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতে হবে। এই তিন দিনে ৩১টি গরু বানানোর শিডিউল দিয়েছি। পালাক্রমে এগুলো যথাসময়ে শেষ করতে হবে।’
ঈদের গরু বানানোর চার্জ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। নেই কোনো নির্দেশনাও। তাই আমরা যে, যে রকম পারি, আয় করে নেই।’
বাংলাদেশ হাইডস অ্যান্ড স্কিনস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, বছরে যে সংখ্যক পশু জবাই হয় তার ৪৫-৫০ শতাংশই কোরবানি ঈদে হয়ে থাকে। তাই ঈদের সময় এত বিপুল সংখ্যক পশু জবাই হওয়ায় পেশাদার কসাইদের দিয়ে পশুর চামড়া ছাড়ানো সম্ভব হয় না। ফলে এ সময় মৌসুমি কসাইদের চাহিদা বাড়ছে। চাহিদা মেটাতে ভিন্ন পেশার মানুষ দুই-তিনদিনের জন্য ছুরি-চাপাতি হাতে নেমে পড়েন এ কাজে।