শীতে বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ফলে দেখা দিচ্ছে শীতজনিত নানা রোগব্যাধি। বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত অসুখে কাবু হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। শীতের শুরু থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দেশের হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হচ্ছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে গত ২৪ ঘণ্টায় আড়াই হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে গত বৃহম্পতিবার পর্যন্ত ৫৫ দিনে সারাদেশের সরকারি হাসপাতালে ১ লাখ ৮ হাজার ৭৪৮ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর বাইরেও কয়েক হাজার রোগী আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, শীত মৌসুমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন রোগব্যাধি বৃদ্ধি পায়। এবারের শীতেও তার ব্যতিক্রম নয়। চলতি শীতে সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, বাতব্যথা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস, টনসিলের ব্যথা ও প্রদাহসহ নানা রোগ বেড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হচ্ছে ডায়রিয়া রোগী। বিশেষ করে এই সময়ে রোটা ভাইরাসের কারণে শিশুরা বেশি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হন বেশি। শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় রোটা ভাইরাস ধুলাবালির সঙ্গে মিশে শিশুর ডায়রিয়া সৃষ্টি করে। এ ছাড়া রোটা ভাইরাস মিশ্রিত ধুলাবালি শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রবেশ করায় শিশুদের শ্বাসনালি সঙ্কুচিত করে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের রোগ তৈরি করে। শীতকালে রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া বেশি ছড়ায়। সবাইকে সচেতন থাকলে এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসা দিয়ে রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তবেই যদি শীতজনিত রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।