প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি শ্রীবরদীর রাজা পাহাড়। হতে পারে সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র। বিধাতা যেন নিজ হাতে প্রকৃতিক সকল সৌন্দর্য্য এখানে লুকিয়ে রেখেছেন। নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করা যাবেনা কি অপরুপ দৃশ্য রাজা পাহাড়ের। পাখির কল কাকলি আর হালকা নীলের সমারোহ মন্ডিত রাজা পাহাড়ের উপরে ওঠলে মনে হবে পাহাড় আর আকাশ যেন মিতালী করেছে। এ পাহাড়ের প্রায় ২ শত একর জায়গা জুরে রয়েছে সমতল ভূমি। বৃহত্তর ময়মনসিংহের বনাঞ্চলে এমন সমতল ভূমি আর কোথাও নেই।
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী সিংগাবরুনা ইউনিয়নে এর অবস্থান। এ পাহাড়ের উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য অবস্থিত। পাহাড়ের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে পাহাড়ি ঝরনা যা ঢেউফা নদী নামে পরিচিত। বর্ষাকালে এ ঝরনার পানি কানায় কানায় উপছে ওঠে। শীতকালে হয়ে যায় শীর্নকায়া। কিন্তু এ নদীর স্্েরাত কখনো বন্ধ হয় না। আপন মনেই বয়ে চলে এ নদী। এখানে পর্যটন কেন্দ্রের বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও উদ্দ্যোগের অভাবে গড়ে ওঠছেনা পর্যটন কেন্দ্র। বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও সামান্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের অভাবে নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য মন্ডিত শ্রীবরদীর গারো পাহাড় ও রাজা পাহাড় ভ্রমন পিপাসু লোকদের কাছে আকর্ষনীয় করা সম্ভব হয় নাই।
এক সময় শাল গজারি আর প্রাকৃতিক গাছের শোভা পেত এ রাজা পাহাড়ে। বনদস্যুদের দ্বারা পাহাড় ধ্বংশ হওয়ার পর আশির দশকে এখানে সরকারি ভাবে সৃজিত হয় বিভিন্ন প্রজাতির উটলড বাগান। জনশ্রুতি আছে প্রাচিন কালে কোন এক গারো রাজা ্্রকানে বাস করত। সে সময় থেকেই এ পাহাড়টি রাজা পাহাড় নামে পরিচিত।
শেরপুর জেলার ভূ-খন্ড জুড়ে যতটুকু গারো পাহাড় রয়েছে তার মধ্যে রাজা পাহাড়ের উচ্চতা সব চেয়ে বেশি। এ পাহাড়ের চুঁড়ায় রয়েছে ৮০/৯০ হেক্টর সমতল ভূমি। শ্রীবরদী উপজেলা শহর থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দূরে রাজা পাহাড়ের অবস্থান। রাজা পাহাড়ের পার্শ্বেই আদিবাসী বাবেলাকোনা, চান্দাপাড়া, মেঘাদল, ঝোলগাঁও, মারাকপাড়া জনপদ। প্রাচিনকাল থেকেই গড়ে ওঠেছে এ গ্রামগুলো।
বনের সবুজে মোড়ানো এ গ্রামগুলোতে গারো, কোচ, হাজং ও মুসলমান অধ্যুষিত এ জায়গায় বিরাজ করে ভিন্ন মাত্রার সংস্কৃতি। এদের জীবন ধারায় রয়েছে আদিমত্তা ও অতিথি পরায়নতা। এদের মধ্যে রয়েছে সহমর্মিতা। বাবেলাকোনায় রয়েছে খ্রীস্টান ধর্মালম্বী গারোদের গির্জা। আদিবাসিদের সংস্কৃতি ধরে রাখতে এবং চর্চাকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে বাবেলাকোনা কালচারাল একাডেমি। সবকিছু মিলিয়েই এ পাহাড় ও পাহারের চার পার্শ্বেও অবস্থান সত্যিই নজর কারার মত। এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠলে সরকারের আয় হবে বিপুল পরিমান রাজস্ব ও কর্মস্থান হবে পাহাড়ি জনপদেও অনেক বেকার যুবকের।