নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হলে বিএনপি তাতে যোগ না দিলেও তা বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের বিষয়ে তিনি বলেন, বিদেশিরা সহায়তা করতে চাইলে স্বাগত জানাব, তবে মাতবরি করলে সহ্য করা হবে না। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. মোমেন বলেন, মিসরে বড় দল ছিল ব্রাদারহুড, তারা নির্বাচনে আসেনি, আফগানিস্তানে তালেবান আসেনি। সুতরাং কোনো দল যদি নির্বাচনে না আসে, এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। যুক্তরাষ্ট্র এটা গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে রাজনীতিবিদদের দায় দেখছেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, কিছু হলেই মিশনে গিয়ে ধরনা দেয়। সাম্প্রতিককালে আমাদের মিডিয়াও এটার জন্য দায়ী। কিছু বাঙালি বিদেশি আছে, তারাও এটার জন্য দায়ী। কয়েকটি গোষ্ঠীর কারণে বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়। প্রতিদিন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রকে ত্যক্ত করে ফেলেন বাংলাদেশি সাংবাদিকরা।
অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের প্রায় সব নির্বাচনে শতকরা ৫০ ভাগ লোক ভোট দেয়। আমেরিকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবসময় নির্বাচন হয়। সিনেটর কেনেডি, সিনেটর জন কেরি– তাদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়ায় না। সম্মানিত লোকের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়ায় না।
ড. মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সুপার পাওয়ার। আমরা তাদের প্রত্যাখ্যান করতে পারি না। আমরা তো এজন্য তাদের পরামর্শকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করি। তবে আমাদের দেশের একটা বাস্তবতা আছে। বাস্তবতার নিরিখে তারা যদি কোনো প্রস্তাব দেয়, আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখি।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র কিছু চায় না– উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমেরিকা কিন্তু বেশি কিছু চায় না। তারা চায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, আমরাও চাই। বরং তারা আমাদের সাহায্য করছে। শুধু নির্বাচন নয়, তাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন রকম সম্পর্ক আছে। আমেরিকা সবসময় বাস্তববাদী।
নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতা কম দেখা যাচ্ছে। সরকার কি বিদেশিদের চুপ থাকতে বাধ্য করল কিনা– জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, আমাদের সেই ক্ষমতা নেই। আমাদের বন্ধু দেশ যারা, তারা অনেক সময় আমাদের উপদেশ দেয়; যেটা ভালো, সেটা গ্রহণ করি। অন্যের যদি ভালো উপদেশ থাকে সহায়ক নির্বাচনের জন্য, আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরে বলছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা। সম্প্রতি তারা বলছে, সংঘাতমুক্ত, আমরাও চাই। কিন্তু সেটা আমরা একা পারব না।
অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, আমাদের দেশের লোকেরা আগেভাগে দুশ্চিন্তা করে। আমরা বিদেশে যে জিনিসপত্র বিক্রি করি, কেউ আমাদের দয়াদাক্ষিণ্য দেখায় না। সস্তায় ভালো জিনিস বিক্রি করি এবং যথাসময়ে পায় বলে কেনে। সুতরাং আমাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই।