ভিক্ষা করে জমানো টাকা করোনা দুর্গতদের মাঝে দান করে ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন একটি মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার গণভবন থেকে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স চলাকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি উপজেলার ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিনের মানবিকতার ঘটনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই করোনার মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে একজন ফকির। যিনি ভিক্ষা করে খান, সাধারণ মানুষ। একসময় কৃষি কাজ করতেন। দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যাওয়ার পর আর কাজ করতে পারেননি। ভিক্ষা করেন। ভিক্ষা করে করে মাত্র ১০ হাজার টাকা জমা করেছিলেন। তার থাকার ঘরটা ঠিক করবেন বলে। তার মাত্র একটা পা, গায়ে ছেঁড়া কাপড়। ঘরে ঠিকমত খাবারও নেই। কিন্তু তারপরও সেই মানুষটা জমানো ১০টি হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন করোনাভাইরাসে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের সাহায্যের জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি সারা বিশ্বে একটা মহৎ দৃষ্টান্ত তিনি সৃষ্টি করেছেন। এত বড় মানবিক গুণ আমাদের অনেক বিত্তশালীর মাঝেও দেখা যায় না। কিন্তু একজন নিঃস্ব মানুষ যার কাছে এই টাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই টাকা দিয়ে আরও দুটো জামা কিনতে পারতেন, ঘরে খাবার কিনতে পারতেন। এই করোনাকালে যে সমস্যা চলছে তার জন্য অনেক কিছু করতে পারতেন, নিজের জন্য অনেক কিছুই চিন্তা করতে পারতেন, কিন্তু সে চিন্তা করেননি। তা ছাড়া এই সময় ভিক্ষা পাওয়া তো তার জন্য মুশকিল ছিল। তাও সে চিন্তা করেনি। তার শেষ সম্বলটুকু দান করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এখনো মানবিক বোধটা আছে। কিন্তু সেটা আমরা পাই কাদের কাছে? যারা নিঃস্ব তাদের কাছে। অনেক সময় দেখি অনেক বিত্তশালীরা হা-হুতাশ করে বেড়ায়। তাদের নাই নাই অভ্যাসটা যায় না। তাদের চাই চাই ভাবটাই সবসময় থেকে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই কাজটি যিনি করেছেন তিনি শেরপুরের ঝিনাইগাতীর নাজিমুদ্দিন। ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তার কাছ অনেক কিছু থেকে শেখার আছে।’
সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এই ভিডিও কনফারেন্স শুরু হয়। কনফারেন্সে অংশ নেওয়া অন্য জেলাগুলো হলো- চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী এবং সিরাজগঞ্জ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস।