বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক শওকত আজিজ রাসেলের গাড়িচালক মো. সুমনকে (২৯) গুলি ও মাদকদ্রব্যসহ আটক করা হয়েছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় চৌরঙ্গী ফিলিং স্টেশনের সামনে থেকে গুলি ও মাদকদ্রব্যসহ তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
বিসিবি পরিচালক শওকত আজিজ রাসেলের বাবার নাম এম এ হাশেম। তিনি পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান।
জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ গতকাল শনিবার বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আজিজ ওই গাড়িতে থাকলেও পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। তবে গাড়ি থেকে তার স্ত্রী (৪০) ও ছেলেকে (১৭) আটক করা হয়। পরে মুচলেকা নিয়ে রাসেলের স্ত্রী ও ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ওই গাড়ি থেকে একটি প্যাকেটে থাকা ২৮ রাউন্ড গুলি, ১ হাজার ২০০ ইয়াবা, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ, ৪৮ ক্যান বিয়ার ও ২২ হাজার ৩০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। মাদক বহনকারী একটি সাদা রঙের পাজারো জিপটি জব্দ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকালে পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএ হাশেম গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে এসে শওকত আজিজ রাসেলের অবৈধ অস্ত্রটি উদ্ধারে পুলিশকে সহায়তা করবে এই মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছেলের স্ত্রী ও নাতিকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছেন। শওকত আজিজ রাসেল ও গাড়িচালক সুমনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা হয়েছে। রাসেলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
এ ব্যাপারে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয় পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে। সেখানে বলা হয়, শুক্রবার রাত ১টার দিকে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদকে ঢাকার বাসায় নামিয়ে দিয়ে নারায়ণগঞ্জ ফিরছিলেন দেহরক্ষী নাজমুল হোসেন ও পুলিশ সুপারের গাড়িচালক জুয়েল মিয়া। রাজধানী তেজগাঁও সাতরাস্তার মগবাজার ফ্লাইওভারের মাঝখানে পৌঁছালে যানজটে আটকে পড়েন তারা। এ সময় গাড়ির চালক জুয়েল মিয়া হর্ন দিলে সামনে থাকা পাজারো জিপ থেকে একজন লোক নেমে এসে পুলিশ সুপারের গাড়ির কাচে সজোরে আঘাত করে গালিগালাজ করতে থাকেন।
নাজমুল হোসেন গাড়ির দরজা খুলতে বলেন। তখন পুলিশ সুপারের গাড়িচালক জুয়েল মিয়া জানালা খুলে প্রতিবাদ করলে উক্ত ব্যক্তি তাকে হত্যার জন্য মাথায় পিস্তল তাক করে ধরেন। গাড়ি থেকে নেমে আসা ব্যক্তি শওকত আজিজ রাসেল পুলিশের লোক বুঝতে পেরে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় পুলিশ সুপারের গাড়িচালক ও দেহরক্ষী পেছন থেকে সামনের জিপটিকে ফলো করতে থাকেন। জিপটিকে রাত পৌনে ৩টার দিকে নারায়ণগঞ্জের দিকে আসতে দেখে মোবাইল ফোনে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই জলিল মাতবরকে এসপির দেহরক্ষী নাজমুল বিষয়টি অবহিত করেন। পরে এসআই জলিলের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশ গিয়ে জিপটিতে তল্লাশি চালায়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, জিপটি থেকে বিপুল পরিমাণ গুলিসহ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে পুলিশ। শওকত আজিজ রাসেল কৌশলে পালিয়ে যান। তবে পুলিশ গাড়িচালক সুমনকে আটক করে। এ সময় গাড়িতে থাকা শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ফারাহ রাসেল ও তার ছেলেকে আটক করে জিজ্ঞাবাসাদের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে দুজনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।