সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একের পর এক ইহুদি ও শ্বেতাঙ্গবিদ্বেষী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে এক সাংবাদিবককে চাকরিচ্যুত করেছে বিবিসির মূল কার্যালয়।
বরখাস্ত হওয়া সেই কর্মচারীর নাম দোন কুয়েভা; লন্ডনে বিবিসির অন্যতম শাখা কার্যালয় বিবিসি থ্রি’র শিডিউল সমন্বয়ক ও প্লেআউট পরিকল্পনাবিদ ছিলেন তিনি।
শনিবার এক প্রতিবেদনে ব্রিটেনের দৈনিক টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, দোন কুয়েভার ফেসবুক আইডির নাম দোন লাস কুয়েভাস অ্যালেন। ২০১৪ সাল থেকে নিয়মিত নিজের আইডিতে ইহুদি ও শ্বেতাঙ্গবিরোধী পোস্ট দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
ইতোমধ্যে অনেক পোস্ট তিনি মুছে দিয়েছেন কুয়েভা, তবে এখনও কিছু পোস্ট রয়েছে তার আইডিতে। সেসব ঘেঁটে দেখা গেছে, ইসরায়েল সংক্রান্ত পোস্টগুলোতে ইসরায়েলকে ‘ইসরানরক’ (ইসরাহেল) এবং ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের নাৎসী, বর্ণবাদী এবং পরজীবী বলে সম্বোধন করেছেন তিনি। ইহুদিদের উপসনালয় সিনাগগকে ‘শয়তানের উপাসনালয়’ বলেছেন, এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদিদের পৃথিবী থেকে নির্মূল করার জন্য নাৎসী বাহিনী যে গণহত্যা (হলোকাস্ট) চালিয়েছিল, তাকেও ‘ধাপ্পাবাজী’ বলে উল্লেখ করেছেন কুয়েভা।
শেতাঙ্গ লোকজনকেও ছাড় দেননি তিনি। বিভিন্ন পোস্টে শ্বেতাঙ্গদের ‘ভাইরাস’ ‘অভিযোজনের ফলে সৃষ্ট মানব প্রজাতি’, ‘গোঁড়া’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। একাধিক পোস্টে ইউরোপীয়দের ‘মেলানিনখেকো পরজীবীতে আক্রান্ত’ বলেও উল্লেখ করেছেন কুয়েভা।
প্রসঙ্গত, মানবদেহে ‘মেলানিন’ নামে একপ্রকার জৈবযৌগ থাকে। আমাদের চোখের চুল এবং ত্বকের রং নির্ভর করে মেলানিনের ওপর। যাদের শরীরে মেলানিনের পরিমাণ বেশি থাকে, তাদের চুল ও ত্বকের রং কালো হয়।
দোম কুয়েভার চাকরিচ্যুতির ব্যাপারটি দাপ্তরিকভাবে প্রকাশ করেনি বিবিসি। তবে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এই সংবাদমাধ্যমের নির্বাহী শাখার সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল টেলিগ্রাম। সেই সদস্য তাকে বলেছেন, ‘যেহেতু এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার, তাই বিস্তারিত কোনো কিছু বলার সুযোগ এখানে নেই। এটুকু বলতে পারি যে আমাদের প্রতিষ্ঠান কখনও ইহুদি বা অন্য কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ, ইসলামভীতি ও বর্ণবাদকে প্রশ্রয় দেয় না।’
সূত্র : এএফপি, এনডিটিভি