“ভাইরে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী ফেল করেছে, এহন (এখন) পোলাপাইন (ছাত্র-ছাত্রীরা) মিষ্টি কেনার ফুর্তিতে নেই, আগে পরীক্ষা ফল (রেজাল্ট) দিয়ার ২দিন আগে থেইে মিষ্টি বানিয়ে রেখে দেই, সেই মিষ্টি রেজাল্টের ৭দিন পর পর্যন্ত বিক্রি করতাম। কিন্তু এবার তা আর হলো না, একদিকে যেমন মহাজন (মালিক) আশা করেছিলো বেশি লাভের; অন্যদিকে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ছে চরম বিপাকে” এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন নয়ানী বাজারে অবস্থিত রাজবল্লব মিষ্টার ভান্ডারের বিক্রেতা শ্রী রবি। তিনি আরোও বলেন, সরহার (সরকার) খুব ভালো কাজ হরছে (করেছে), নকল ছাড়া পরীক্ষা দিলে পাস এমনই হবে। আর এমন হলেই ছাত্র-ছাত্রীরা মনযোগ দিয়ে পড়বে।
২০জুলাই বৃহস্পতিবার ১.৩০মিনিটের সময় সারা বাংলাদেশে একযুগে রেজাল্ট বের হয়। কিন্তু রেজাল্টের পর পরই বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের মন খারাপ; কারণ রেজাল্টে কেউ পাস করছে; কেউবা আবার ফেল করেছে। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ মিলে পাস করেছে ৫৭.৪৮ শতাংশ। সারা জেলাজুড়ে জিপিএ-৫ মাত্র ৪০জন। গতবারের চেয়ে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে এবার। তবে ৩১জন জিপিএ-৫ পাওয়ায় শীর্ষে শেরপুর সরকারি কলেজ। এদিকে জেলার ২৮টি কলেজের মধ্যে ২৩ কলেজের কোন পরীক্ষার্থীই জিপিএ-৫ পায়নি।
আগে ফল প্রকাশের পর পত্রিকার পাতা ভরা থাকে শহরের স্টার কলেজগুলোর ছাত্র-ছাত্রীর উল্লাস। ফল প্রকাশের ৫থেকে ৭দিনের মধ্যে কোনো দোকানে মিষ্টি পাওয়া যায়নি। অফিস -আদালত থেকে বাসা বা প্রতিবেশীর সন্তানদের কীর্তিপূর্ণ রেজাল্টের স্মারক বহন করে মিষ্টির বাক্স। এটা সামাজিক সম্মানেরও স্মারক বটে। কিন্তু স্থিত হয়ে গেছে এবার এইচএসসি রেজাল্ট দেয়ার পরে। অন্যদিকে জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল অনুযায়ী পাসের চেয়ে ফেলের সংখ্যা বেশি।
তথ্যমতে, শ্রীবরদীর কলেজ পর্যায়ে- ভারেরা এসপি স্কুল এন্ড কলেজে মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ৮জন, পাস করেছে ৪জন; ফেল করেছে ৪জন। শ্রীবরদী সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী ১৯৬জন, পাস করেছে ৯৮জন; ফেল করেছে ৯৮জন। মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ৭১১জন, পাস করেছে ২৮৭জন; ফেল করেছে ৪২৪জন। ব্যবসা বিভাগে পরীক্ষার্থী ১৬৩জন, পাস করেছে ৬৯জন ফেল করেছে ৯৪জন। আশেয়া আইন উদ্দিন মহিলা কলেজে মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ১৪০জন, পাস করেছে ৬৬জন; ফেল করেছে ৭৪জন। ব্যবসা বিভাগে পরীক্ষার্থী ৩৭জন, পাস করেছে ১৯জন; ফেল করেছে ১৮জন। আইডিয়াল কলেজে মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ৪জন, পাস করেছে ১জন; ফেল করেছে ৩জন। কলেজ পর্যায়ে মোট গড় পাসের হার ৪২.৯০ শতাংশ।
শ্রীবরদীর মাদ্রাসা পর্যায়ে শ্রীবরদী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী ২০১জন, পাস করেছে ৭৮জন; ফেল করেছে ১২৩।কুরুয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী ২৭জন, পাস করেছে ৬জন; ফেল করেছে ২১জন। ভেলুয়া এমকে আলিম মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী ৪২জন, পাস করেছে ১০জন; ফেল করেছে ৩২জন। কাকিলাকুড়া ফাজিল মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী ৫৪জন, পাস করেছে ৮জন; ফেল করেছে ৪৬জন। ভায়াডাঙ্গা আলিম মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী ২২জন, পাস করেছে ৪জন; ফেল করেছে ১৮জন। ভটপুর আলিম মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী ৪৫জন, পাস করেছে ২১জন; ফেল করেছে ২৪জন। ফতেহপুর ফাজিল মাদ্রাসায় পরীক্ষার্থী ৯৯জন, পাস করেছে ৩২জন; ফেল করেছে ৬৭জন। মোট গড় পাশের হার ৩১.৮৫শতাংশ।