বরগুনায় বহুল আলোচিত রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির একটি কপি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিতে মিন্নির সঙ্গে নয়ন বন্ডের সম্পর্কের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
জনাবন্দিতে মিন্নি বলেন, আইডিয়াল কলেজে পড়াশোনা করার সময় ২০১৭ সালে কলেজে যাওয়া আসার পথে নয়ন বন্ড আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে জ্বালাতন করতো। আমি তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় সে আমার বাবা ও ছোট ভাইকে ক্ষতি করার ভয় দেখাতো।
আমি রিফাত শরীফকে ভালোবাসতাম। কিন্তু রিফাত শরীফ অন্য মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক করার কিছু বিষয় আমি লক্ষ্য করি এবং এ কারণে রিফাতের সঙ্গে আমার সম্পর্কের কিছুটা অবনতি ঘটে এবং আমি ধীরে ধীরে নয়ন বন্ডের দিকে ঝুঁকে পড়ি এবং নয়ন বন্ডের সঙ্গে আমার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বরগুনা সরকারি কলেজে পড়ার সময় রিফাত ফরাজী ও নয়ন বন্ডের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। প্রেমের সম্পর্কের কারণে নয়ন বন্ডের বাসায় আমার যাতায়াত ছিল।
নয়নের বাসায় দুজনের শারীরিক সম্পর্কের কিছু ছবি ও ভিডিও নয়ন গোপনে ধারণ করে। যা আমি প্রথমে জানতাম না। নয়নের বাসায় আমি প্রায়ই যেতাম এবং আমাদের শারীরিক সম্পর্ক চলতে থাকে।
এরপর ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর আমি রোজী অ্যান্টির বাসায় যাওয়ার পথে বিকেল বেলা ব্যাংক কলোনি থেকে নয়ন বন্ড রিকশাযোগে আমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। তখন নয়নের বাসায় আমার ও নয়নের বিয়ে হয়।
নয়নের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখি। নয়নের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি আমার পরিবারের কেউ জানে না। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে আমি কুয়াকাটা যাই এবং নয়নের সঙ্গে একটি হোটেলে রাত্রিযাপন করি।
আমি জানতে পারি নয়ন মাদকসেবী, ছিনতাই করে এবং তার নামে থানায় অনেক মামলা আছে। এ কারণে রিফাত শরীফের সঙ্গে আমার পূর্বের ভালোবাসার সম্পর্ক আবার শুরু হয়। গত ২৬ এপ্রিল পারিবারিকভাবে রিফাত শরীফের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়।
গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে রিফাত শরীফকে তার স্ত্রীর সামনেই কুপিয়ে জখম করে একদল লোক।
পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
অভিযুক্ত হামলাকারীদের একজন, যিনি এলাকায় ‘নয়ন বন্ড’ নামে পরিচিতি ছিল, পুলিশ তাকে আটক করে।
পরে, পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।