শেরপুরে মেধাবী কলেজছাত্রী আশরাফুন্নাহার লোপাকে নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর মামলার দীর্ঘ ১ মাসের অধিক সময় অতিবাহিত হলেও আজও আদালতে করানো হয়নি লোপার ২২ ধারার জবানবন্দি। অন্যদিকে অভিযোগ উঠেছে মামলার মূল আসামী লোপার যৌতুকলোভী স্বামী ডিএমপি পুলিশের এসআই শাহিনুল ইসলাম হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের অর্ন্তবর্তী জামিন নিয়ে এলেও তার সহযোগীরা জামিন না নিয়েই বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদের গ্রেফতারসহ তদন্ত কার্যক্রমও অনেকটা ঝিমিয়ে পড়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে লোপার পরিবার।
এ বিষয়ে লোপার মা ও মামলার বাদী স্কুলশিক্ষিকা সেলিনা আক্তার লাকী বলেন, ৫ জুন শ্রীবরদী থানায় এসআই শাহীন ও তার পরিবারের ৫ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ডের পর ১৫ জুন শাহীন হাইকোর্ট থেকে ৪ সপ্তাহের অর্ন্তবর্তী জামিন নিয়ে এসে নানা ফন্দি-ফিকিরসহ থানায় ঘুরাফেরা করছে। আর অন্যরা জামিন না নিয়ে আসলেও প্রকাশ্যেই বাড়ি-ঘরে অবস্থান করছে। তিনি আও বলেন, লোপাসহ সকল সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলেও এখনও আদালতে লোপার জবানবন্দি গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এদিকে সহযোগী আসামীদের গ্রেফতার ও নির্যাতিতা লোপার জবানবন্দি গ্রহণ না করা এবং মূল আসামীর থানায় ঘুরাফেরার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, জেলা মহিলা পরিষদের সভাপতি জয়শ্রী দাস লক্ষ্মী ও জনউদ্যোগ আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ। তারা অবিলম্বে সহযোগী আসামীদের গ্রেফতারসহ সকলকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আক্তার হোসেন বলেন, মামলার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে অবশ্যই লোপার ২২ ধারার জবানবন্দি গ্রহণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তদন্ত তদারকি শেষ হলেই সেটি করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জামিনে থাকা আসামী তার প্রয়োজনে থানায় আসতেই পারেন। আর কেউ জামিন না নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, শেরপুর শহরের দমদমা মহল্লার ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলামের একমাত্র কন্যা ও সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী লোপাকে পার্শ্ববর্তী শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের বাড়িতে গত ২২ মে রাতে ২০ লাখ টাকার যৌতুকের দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে অমানসিক নির্যাতন চালায় স্বামী এসআই শাহিন ও তার পরিবারের লোকজন। ওই ঘটনায় মামলার পর পাষন্ড স্বামী এসআই শাহীনসহ সহযোগীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবিতে ফুঁসে উঠে স্থানীয় মহিলা পরিষদ ও মানবাধিকার কমিশনসহ বিভিন্ন সংগঠন।