শেরপুরের নালিতাবাড়ীর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিনকে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। আজ শনিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার সোহেল রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওই চিঠির প্রতিবাদে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ প্রতিবাদ সভা করেছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ ডিসেম্বর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন পাকিস্তানিদের কাছে আত্মসমর্পণকারী মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৬ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান ফারুকী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সাহাব উদ্দিনকে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। একই সাথে সাহাব উদ্দিনের পরিবর্তে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আ. ছালামকে উপজেলা কামান্ডারের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
লিখিত ওই অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার ছালুয়াতলা গ্রামের মৃত লাল মামুদের ছেলে সাহাব উদ্দিন। ১৯৭১ সালে তিনি (সাহাব উদ্দিন)সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে প্রশিক্ষণ শেষে নালিতাবাড়ীতে মুক্তিযুদ্ধে অপারেশনে আসেন। এ সময় সবার অজান্তে একটি এলএমজি ও ২শ’ রাউন্ড গুলি সহ পাক সেনাদের ঝিনাইগাতী উপজেলার আহমদনগর ক্যাম্পে সাহাব উদ্দিন আত্মসমর্পণ করে এবং যুদ্ধের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করায় পাক সেনারা তাকে হত্যা না করে জামালপুর কারাগারে বন্দি করে রাখেন। স্বাধীনতার পর তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৫ সালের ২৭ মে শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করে।
অন্যদিকে, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিনকে যাচাই বাছাই কমিটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় এর প্রতিবাদে শনিবার বিকালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের একাংশের সদস্যরা সভা করেছে। প্রতিবাদ সভায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন, ডেপুটি কমান্ডার আ. ছালাম, মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন, ও শ্রমিক নেতা মোখলেছুর রহমান লেবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সম্পর্কে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করছে। আমি আইনগত পদক্ষেপ নিব।
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরফদার সোহেল রহমান বলেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি থেকে সাহাব উদ্দিনের স্থলে ডেপুটি কমান্ডার আ. ছালামের নাম পাঠানো হয়েছে। তবে আ. ছালাম উপজেলা কামান্ডার প্রতিনিধির পদ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।