শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বালু মহালের রয়েলিটি আদায় সংক্রান্ত দুইপক্ষের দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বুধবার (২২ জুলাই) দুপুরে উপজেলার চারআলী বাজারে মেসার্স আল আমিন ট্রেডার্সের উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী নেতা রহুল আমীনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আল আমিন ট্রেডার্সের পক্ষে লিখিত বক্তব্য রাখেন বালু ব্যবসায়ী নেতা মোঃ জাকারিয়া। এ সময় আল আমিন ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী শহিদুল ইসলাম, ব্যবসায়ী নেতা হারুনুর রশিদ ও আমজাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা প্রাপ্তির পর ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল ৯টি বালু মহাল তাদের বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় ৩টি মহাল ব্যতীত অন্যান্য মৌজা বুঝিয়ে দেয় সরকার। এর ৫ মাস পর উলেখিত ৩টি মৌজার পরিবর্তে কালাকুমা, নাকুগাঁও ও হাতিপাগার মৌজা তাদের অনুকূলে দেয় প্রশাসন। মেয়াদের শেষদিকে রাস্তার সংস্কার কাজ ও করোনায় লকডাউনের কারণে উত্তোলিত বালু পরিবহন ও বিক্রি করতে না পারায় তাদের প্রায় ৩০ লাখ ঘনফুট বালু মজুদ রয়ে যায়।
পরবর্তীতে ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজ ভোগাই নদীর চারটি এলাকা বালু মহাল হিসেবে ইজারা নিয়ে পুরো ভোগাই নদী দখলে নেয়। ফলে আল আমিন ট্রেডার্সের মালিকানাধীন বালু পরিবহন ও বিক্রি করতে গেলে রয়েলিটি আদায় নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়। এমতাবস্থায় উত্তোলিত বালু আনতে সময় চেয়ে আল আমিন ট্রেডার্স হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলে হাইকোর্ট ১৫ দিনের সময় দিয়ে জেলা প্রশাসককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। নির্দেশমতে গত ১৩ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজকে ১৫ দিনের জন্য কালুকুমা, নাকুগাঁও ও হাতিপাগার মৌজায় রয়েলিটি আদায় বন্ধ করে তদস্থলে আল আমিন ট্রেডার্সকে নিযুক্ত করেন। এরপর আল আমিন ট্রেডার্সের রিটের আদেশ স্থগিত চেয়ে ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজ গত ১৪ জুলাই হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করলে আল আমিন ট্রেডার্সের আদেশ স্থগিতের রায় দেন। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুনরায় ২১ জুলাই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আল আমিন ট্রেডার্সের কাছ থেকে ইজারার দখল স্থগিত করেন। এ সুযোগে ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজের লোকজন তাদের ইজারাকৃত ৪টি বালু মহালের বাইরে এসে নাকুগাঁও, হাতিপাগার ও কালাকুমা মৌজা থেকে রয়েলিটি আদায় শুরু করে। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ মেনে নিয়েছি। কিন্তু ভোগাই নদীর নাকুগাঁও, হাতিপাগার ও কালাকুমা মৌজায় ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজেরও রয়েলিটি আদায়ের বৈধতা নেই। এ স্থান থেকে সরকার সরাসরি খাস কালেকশন করতে পারে, অন্য কেউ নয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস এন্টারপ্রাইজের পক্ষে মনিরুজ্জামান সোহাগ জানান, আমাদের ৪টি বালু মহালের মধ্যে ৩টিই নদীর ওপারে (পূর্বপাড়ে)। ফলে ওইসব বালু মহালের বালু চারআলী ব্রিজ দিয়ে পরিবহণ করতে হয়। এরজন্য আমরা ওই এলাকায় অফিস নিয়ে রয়েলিটি আদায় করে থাকি।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, বালু মহাল ইজারা আইনে সরকারী খাস কালেকশনের সুযোগ নেই। বালু মহল ইজারার বৈধ স্থানের প্রশ্নে তিনি বলেন, এ বিষয়টি জেলা প্রশাসকের এখতিয়ার।
এ ব্যাপারে শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, এ সংক্রান্ত বিষয়ে আপডেট খবর নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলতে পারবেন।