শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় সরকার নির্ধারিত ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে ভোররাত থেকে খাদ্যগুদামের সামনে দীর্ঘ লাইনে অপোর প্রহর গুনতে গিয়ে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন চাষীরা। এমন দূর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার চাষী। ফলে বার ও ইউনিয়ন অনুযায়ী চাষীদের মাঝে বুধবার (১৯ জুন) থেকে সময় বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে সরকারীভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে বোরো ধান ক্রয় করতে নালিতাবাড়ী উপজেলায় ল্যমাত্রা ধরা হয় ৫৭২ মেট্টিকটন। এ ল্যমাত্রা বা বরাদ্দের পরিমাণ আরও ৯৫০ মেট্টিকটন বাড়ানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যেই তা কার্যকর হবে। গত ২০ মে থেকে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সরাসরি চাষীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৪০ টাকা মণ দরে বোরো ধান কেনা হবে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০০ মেট্টিকটন বোরো ধান কেনা হয়েছে।
তবে চাষীদের অভিযোগ, সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে গেলে অবহেলার শিকার হন তারা। প্রায় সমই তাদের ধান ঠুনকো অজুহাতে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এেেত্র কেবলমাত্র বিশেষ ব্যক্তিরাই সরকারের সুবিধা বেশি পাচ্ছে। চাষীরা আরও অভিযোগ করেন, খাদ্যগুদামের সামনে দীর্ঘ সময় ধরে লম্বা লাইনে দাড়িয়েও তারা ধান বিক্রি করতে পারছেন না। ভোররাত থেকে অপোর পরও আসছে না তাদের বিক্রির সিরিয়াল। ফলে গুদামের সামনে তীব্র গরমে তারা অসহনীয় দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামের বোরো চাষী রেজাউল করিম (৪০) জানান, সরকারের কাছে ন্যায্য মূল্যে বোরো ধান বিক্রি করতে সকাল আটটা থেকে ২৫ মণ ধান নিয়ে অপো করছেন।
শহরের গড়কান্দার বোরো চাষী মানিক চন্দ্র মন্ডল (৭০) জানান, ভোররাত সাড়ে ছয়টা থেকে ২৫ মণ বোরো ধান নিয়ে তীব্র গরমে দাড়িয়ে আছেন। কিন্তু বেলা একটা পর্যন্ত ধান কেনাই শুরু হয়নি।
কালিনগর গ্রামের বোরো চাষী তারা মিয়া (৩৫) জানান, ২৫ মণ বোরো ধান নিয়ে তিনি এসেছেন রাত আড়াইটায়। তখন থেকে লাইনে দাড়িয়ে এখন বেলা একটা। তবু ধান কেনার ল্যণই নেই। এভাবে প্রচন্ড রোদে দাড়িয়ে থেকে এখন আর পারছি না।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সম্রাট জানান, জনবলের তুলনায় বোরো চাষীদের উপস্থিতি বেশি হচ্ছে বিধায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বুধবার থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, প্রতি সপ্তাহের রবিবার রূপনারায়নকুড়া, মরিচপুরান ও নন্নী ইউনিয়ন, সোমবার কলসপাড় ও রাজনগর ইউনিয়ন এবং নালিতাবাড়ী পৌরসভা, বুধবার বাঘবেড়, যোগানিয়া ও নালিতাবাড়ী ইউনিয়ন এবং বৃহস্পতিবার নয়াবিল, রামচন্দ্রকুড়া, নয়াবিল ও পোড়াগাঁও ইউনিয়নের কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। কিছু কিছু েেত্র কৃষকের ধান নিয়মানুযায়ী আদ্রতা/শুকনো মানসম্মত না হওয়ায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তবে মান ঠিক থাকলে কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় না বলেও জানান তিনি।