শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন যুদ্ধে নামছেন পিতা ও পুত্র। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নৌকা মার্কার দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছেন তারা।
জানা গেছে, উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউপির চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ বাদশা গত ৩০ মার্চ অসুস্থ্যতাজনিত কারনে ইন্তেকাল করেন। পরে ওই ইউপির চেয়ারম্যানের পদ শুন্য ঘোষনা করা হয়। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হলে শুক্রবার (১৭ জুন) উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় থেকে পিতাপুত্র দুজনেই দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। পিতা নূর ইসলাম মাষ্টার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। আর পুত্র হাফিজুল ইসলাম জুয়েল উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য। এছাড়া সাবেক চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম খোকা, যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি আয়নাল ও শাহ পরান আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আগামী ২৭ জুলাই ওই ইউনিয়নে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, পিতা নূর ইসলাম মাষ্টার ও পুত্র হাফিজুল ইসলাম জুয়েল একই ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিনত হয়েছে। অনেকেই বলছেন “রামচন্দ্রকুড়ায় ভোটের খেলা, নৌকার যুদ্ধে বাপ-পুলা।”
পিতাপুত্র একই সাথে কেন দলীয় মনোনয়ন চাইলেন? এমন প্রশ্নে নূর ইসলাম মাষ্টার বলেন, আমি ছাত্রলীগ মনোনীত ময়মনসিংহের গৌরিপুর কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভিপি নির্বাচিত হই। তৎকালীন সময়ে স্বৈরশাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ময়মনসিংহের উত্তাল রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছি। রামচন্দ্রকুড়া মন্ডলিয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩৫ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। ১৯৯৮ সালে এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হই। কখনো দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যায়নি। শেখ মুজিবের আদর্শিক কর্মী হিসেবে জীবন যাপন করে যাচ্ছি। আমি পেশায় একজন শিক্ষক হওয়ায় পরবর্তীতে আর কোন নির্বাচনে আসিনি। আমার বড় ছেলে হাফিজুল ইসলাম জুয়েল পারিবারিক শিক্ষা হতেই মুজিবাদর্শের একজন কর্মী। নালিতাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও বর্তমানে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। গত ইউপি নির্বাচনে আমি মনোনয়ন চাইনি। আমার ছেলেকেই মনোনয়ন চাইতে বলেছিলাম। ভেবেছিলাম দলের প্রতি আমার ত্যাগ ও তার নিবেদিত কর্মের বিবেচনায় তাকেই দল মনোনীত করবে। কেননা আমার ইউনিয়নের হেভিওয়েট প্রার্থীদের অতীত আমলনামায় দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গের অভিযোগ ছিল। সাধারণ মানুষের প্রচন্ড চাওয়া সত্তেও জুয়েলকে নৌকা প্রতিক না দেওয়ায় ব্যাথিত হইনি।
যেহেতু গতবার জুয়েলকে মনোনয়ন দেওয়া হইনি। এবারও নাও দিতে পারে সম্প্রতি এমন গুঞ্জন থেকেই পিতাপুত্র এক সাথেই মনোনয়ন চেয়েছি।
আপনাদের মনোনীত না করা হলে বিদ্রেহী প্রার্থী হবেন কি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কোনদিন শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের বাইরে যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবো না। তবে তিনি বলেন দল আমাদের মুল্যায়ন করবে।