শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত ‘সোহাগপুর বিধবাপল্লী’ গণহত্যা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকালে শহীদদের স্মরনে নির্মিত সৌরজায়া স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পন, আলোচনা সভা, বীরাঙ্গনা ও শহীদ জায়া পরিবারকে সংবর্ধনা, নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের নারকীয় তান্ডবে এ গ্রামে সংঘটিত হয় গণহত্যা। তাদের নৃশংসতা, বর্বরতায় নিভে যায় ১৮৭ জন পুরুষের তাজা প্রাণ। সম্ভ্রমহারা হন ১২ জন গৃহবধূ। নিঃশেষ হয়ে যায় শতাধিক পরিবারের স্বপ্ন। স্বাধীনতা অর্জনের পর গ্রামটির নাম পাল্টে হয়ে যায় বিধবাপল্লী। জীবন সংগ্রামের কঠিন বাস্তবতা নিয়ে এ গ্রামে ৫৮ জন নারী বিধবা হয়েছিলেন। এখনও বেঁচে আছে ২৩ জন স্বামী-সন্তান হারা বিধবা, একজন মৃত্যুবরণ করায় ১২ বীরাঙ্গণার মধ্যে ১১ জন এবং শহীদ পরিবারের অর্ধশতাধিক সদস্য।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খৃষ্টফার হিমেল রিছিল। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঈফফাত জাহান তুলি, পৌরমেয়র আবুবক্কর সিদ্দিক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা কামাল, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রান ও সমাজকল্যান উপকমিটির সদস্য গোপাল চন্দ্র সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ বকুল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ, সিনিয়র সাংবাদিক এমএ হাকাম হীরা, ইউপি চেয়ারম্যান নিয়ামুল কাউছার, কাকরকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নিজাম উদ্দীন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান, বীরাঙ্গনা হাফিজা বেওয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল মান্নান সোহেল। পরে বীরাঙ্গনা ও শহীদ জায়া পরিবারকে সংবর্ধনা, নগদ এক হাজার করে টাকা ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।